রফতানিতে নতুন রেকর্ড, অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি ডলার ছাড়ানোর আশাবাদ
৯ মে ২০২২ ২০:১৭
ঢাকা: দেশের রফতানি আয়ে নতুন রেকর্ড হয়েছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত) রফতানি হয়েছে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছিল বাংলাদেশ, যা ছিল এক অর্থবছরে রফতানির রেকর্ড। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই সেই রেকর্ড ভেঙে রফতানি খাতের নতুন রেকর্ড হলো।
এদিকে, চলতি অর্থবছরে যেভাবে পণ্য রফতানি হচ্ছে, আগামী দুই মাসে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে এই অর্থবছরে রফতানি ৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলার অতিক্রম করবে বলে আশা করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। সেক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো কোনো অর্থবছরে ৫ হাজার ডলারের বেশি পণ্য রফতানির রেকর্ড স্পর্শ করতে পারবে বাংলাদেশ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তাদের ওয়েবসাইটে রফতানির হালনাগাদ এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি পণ্য রফতানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। আর এই অর্থবছরের জন্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলার। অর্থাৎ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসেই লক্ষ্যমাত্রার ৯৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ অর্জিত হয়েছে। বাকি দুই মাসে এই লক্ষ্যমাত্রা বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই অতিক্রম করবে— সেটিকেই স্বাভাবিক মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইপিবি’র তথ্য আরও বলছে, এপ্রিলে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৭ কোটি ডলার। এর বিপরীতে এপ্রিল মাসে রফতানি হয়েছে ৪৭৪ কোটি ডলারের পণ্য। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪০ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি পণ্য রফতানি হয়েছে এই মাসে। গত বছরের এপ্রিলের সঙ্গে তুলনা করলে অবশ্য এ বছরের এপ্রিলে রফতানি বেড়েছে প্রায় ৫১ শতাংশ।
এদিকে, ১০ মাসের সার্বিক হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রফতানি বেশি হয়েছে ২০ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এই প্রবৃদ্ধি ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ। এর আগে কোনো অর্থবছরেই আগের অর্থবছরের তুলনায় এত বেশি প্রবৃদ্ধি দেখা যায়নি রফতানিতে।
ইপিবি’র পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বরাবরের মতোই রফতানি খাতে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে তৈরি পোশাক খাত। এ অর্থবছরের ১০ মাসে যে ৪ হাজার ৩৩৪ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে, তার মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকেই এসেছে ৩ হাজার ৫৩৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ তৈরি পোশাক খাতের রফতানি মোট রফতানির ৮৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। এই রফতানি আবার এ বছরের প্রথম ১০ মাসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি।
এছাড়া এই ১০ মাসে হিমায়িত ও তাজা মাছ রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ দশমিক ৩৯ শতাংশ, কৃষি খাতে ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ, রাসায়নিক পণ্যে ২৪ দশমিক ০৬ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ, রাবার জাতীয় পণ্যে ২১ দশমিক ৭১ শতাংশ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ১৮ দশমিক ৭০ শতাংশ, হস্তশিল্প পণ্যে ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং বিশেষায়িত টেক্সটাইল পণ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ বেশি পণ্য রফতানি হয়েছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর