যশোরে শ্রমিক সংকটে মাঠেই নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান
৯ মে ২০২২ ২২:০৫
যশোর: যশোরের শার্শায় তিন দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে শত শত বিঘা বোরো ধান। সময়মত ঘরে তুলতে না পেরে ডুবে যাওয়া ধান নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অনেক কৃষক। ফলন ভালো হলেও আবহাওয়া পরিস্থিতি ও শ্রমিক সংকটে সঠিক সময়ে ধান কাটতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তারা।
ইদের আগে থেকে কিছু কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হলেও অনেকেই ধান বাড়িতে না এনে জমিতেই গাদা দিয়ে রেখে দেন কৃষকরা। এবার বৃষ্টিতে মলিন হয়ে গেছে তাদের মুখের হাসি। পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের দীর্ঘদিনের শ্রম।
সোমবারও (৯ মে) সকাল ১১টা থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। মুসুলধারে বৃষ্টিতে পানির নিচে তলিয়ে গেছে কৃষকের শত শত বিঘা বোরো ধান।
আবহওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে থাকা গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড় আসানিতে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। যে কারণে বৃষ্টিপাতের পরিমান আরও বাড়তে পারে।
কৃষক রহমত আলী বলেন, ‘ইদের দুই দিন পরে ধান কাটা শুরু করি। বাড়িতে নেওয়ার আগেই বৃষ্টিতে আমার ধানের জমি তলিয়ে গেছে। আমি আমার ফসলের উপর নির্ভর। আমি কি করে সংসার চালাবো?’
কৃষক সাহাজান আলী বলেন, ‘তিন বিঘা ধানের মধ্যে, এক বিঘা ধান বাসায় নিয়ে আসতে পেরেছি। এক বিঘা বাধা হয়েছে, বাকি দুই বিঘা কেটে জমিতে ফেলে রাখা। এই বৃষ্টিতে আমার ধানের কি হবে? এই ফসলের উপর আমার নির্ভর।’
সিরাজুল ইসলাম বলেন আমার দুই বিঘা ধান মাঠে। আমার চারটা গরু আছে বিচলী সব খাওয়ানো শেষ। এই বৃষ্টিতে ধান বাড়িতে না আনতে পারলে আমরা সহ গরু গুলো না খেয়ে থাকবে।
কৃষক আমীর হোসেন জানান, প্রতি বছর দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা শ্রমিক দিয়ে ধান কাটতে হয়। কিন্তু এবছর খুব কম শ্রমিক আসায় মাঠের পাকা ধান এখনও কাটা হয়নি। শ্রমিক সংকটের পাশাপাশি বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতি অনেক খারাপ। ধান কাটতে না পেরে খুবই চিন্তায় আছি।’
শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ মন্ডল বলেন, ‘আবহাওয়া পরিস্থিতি কিছুটা খারাপ হলেও দুই দিনের বৃষ্টিতে ধানের তেমন সমস্যা হবে না। তবে আজকের বৃষ্টির আগে যারা এখনও ধান ঘরে তুলতে পারিনি, তাদের ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব মাঠ থেকে পানি অপসারণ করে ধান সংগ্রহ করে বাড়িতে আনার চেষ্টা করতে হবে।’
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, সোমবার টানা ২ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৭২.৩ মিলিলিটার।
সারাবাংলা/এমও