দরকষাকষি করে লাভ নেই, নির্বাচনে আসেন: বিএনপিকে কাদের
১০ মে ২০২২ ১৪:৪৪
ঢাকা: বিএনপিকে দরকষাকষি না করে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দরকষাকষি করে কোনো লাভ নেই। দরকষাকষিতে সরকার সংবিধান থেকে নড়বে না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়, ঠিক সেভাবেই সরকার নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে।
মঙ্গলবার (১০ মে) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন। পরে সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতিতে সভা শুরু হয়।
কুমিল্লায় এলডিপি মহাসচিবের ওপর হামলার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বিবৃতির জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই হামলার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেবে। শেখ হাসিনার আমলে কোনো ধরনের অপকর্ম, কোনো প্রকার অনিয়মের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। এখানেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
এই ঘটনাকে উপজীব্য করে ফখরুল সাহেব সরকারের অন্ধ সমালোচনায় বিষোদগার করেছেন স্বভাবসুলভ এবং বরাবরের মতো বলেও মনে করেন তিনি।
এলডিপি মহাসচিবের নিজ হাতে ছোঁড়া গুলিতে ক্ষমতাসীন সংগঠনের দুইজন কর্মীর গুলিবিদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেব একটি শব্দও বলেননি। পুরোপুরি চেপে গেছেন। এটা কি রাজনৈতিক সততা? এটা কি গণতন্ত্র? এই ধরনের সত্য গোপনে হত্যা সন্ত্রাসের রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া এবং লালনের কাজটি তারা করে আসছেন, তাদের জন্মলগ্ন থেকে। ক্ষমতায় থাকাকালেও তারা এটিই করেছেন।
ফখরুল সাহেব আজকাল সবকিছু এক চক্ষু হরিণের মতো দেখেন দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নাহলে এলডিপি মহাসচিবের গুলি ছোঁড়ার বিষয়টি তিনি দেখতে পেতেন। তার বিবৃতি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে প্রকৃত সত্য লুকিয়ে শিবের গীত গাওয়ার জন্য।
‘সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে হামলার পেছনে ইন্ধন ছিল’- মির্জা ফখরুলের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের ধারণা ক্ষমতা-লিপ্সায় অন্ধ হয়ে বিএনপি মহাসচিব পলিটিক্যাল হ্যালোসিনেশনে ভুগছেন। ক্ষমতার থাকা অবস্থায় সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে হামলার পরিকল্পনা করা, সন্ত্রাস চালানো গ্রেনেড হামলা, আগুন-সন্ত্রাস এই সব কাজের চর্চার অপরাজনীতিতে আওয়ামী লীগ বিশ্বাসী নয়।
‘ইভিএম তো পরের ব্যাপার। আগে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর তারপর নির্বাচন।’- মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ইভিএম পরের ব্যাপার কেন? আপত্তি কোথায়? পৃথিবীর বহু দেশে ইভিএমে নির্বাচন হচ্ছে। আপনারা কি নির্বাচনে কারচুপি করতে চান? কারচুপি জালিয়াতি এড়ানোর জন্য এই ইভিএম ব্যবস্থার চেয়ে আধুনিক কোনো পদ্ধতি নেই। নির্বাচনে জালিয়াতি কারচুপি ঠেকানোর জন্য। এতে আপনাদের আপত্তি থাকবে কেন?
পদত্যাগ কেন করতে হবে? প্রশ্ন উত্থাপন করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই ধরনের কথা দেশের মানুষ ১৩ বছর যাবৎ শুনছে। গত নির্বাচনের সময়ও বিএনপি এবং তাদের জোটের হাঁকডাক শুনেছে। কিন্তু পানি ঘোলা করে অবশেষে তারা ডায়ালগে এসেছেন। নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন। এবারও সেই একই কথা মুখে মুখে বলছে। কিন্তু বিএনপি নেতারা ভালো করেই জানে, দলের অস্তিত্ব রক্ষায় তাদের আসতেই হবে। তাদের হাতে কোনো বিকল্প নেই।
সভায় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খানসহ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এনআর/এএম