Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সরকারের পরিণতি শ্রীলংকার চেয়েও খারাপ হবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ মে ২০২২ ১৭:১৭

ঢাকা: বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পরিণতি শ্রীলংকার চেয়েওে খারাপ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার (১০ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে গতকাল সোমবার (৯ মে) অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।

এর আগে, দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। যৌথ সভায় বিএনপির রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, এ বি এম মোশাররফ হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শ্রীলংকার পরিস্থিতি থেকে এই সরকারের শিক্ষা নিয়ে লাভ হবে না। কারণ, তারা শিক্ষা নিতে জানে না। শিক্ষা নিলে এই ১০ বছরে নিতে পারত। কিন্তু তারা কোনো শিক্ষা নেয়নি। এদের (সরকার) অবস্থা শ্রীলংকা চেয়েও খারাপ হবে। শ্রীলংকাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে না সব। এরা বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপিয়ে পড়বে।’

সব আসনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে— প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার যে পুরোপুরিভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, তার প্রমাণ হচ্ছে এটা (প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য)। প্রধানমন্ত্রী কীভাবে বলতে পারেন, তিনশ আসনে ইভিএমে নির্বাচন হবে, যেখানে নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক করার দায়িত্ব সম্পূর্ণই নির্বাচন কমিশনের। এ থেকে প্রমাণ হয়— সরকার সচেতনভাবে, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা অর্থাৎ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে।’

ইভিএম নিয়ে বিএনপির বক্তব্য জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইলেকশন কমিশনই জবাব দিয়ে দিয়েছে। আমার বলার আর কিছু আছে বলে মনে হয় না।’

নির্বাচনের বিষয়ে দলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব স্পষ্টভাবে বলেছি, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। এর মধ্যে এতটুকু ফাঁক-ফোকর নেই। এই সরকারকে যেতে হবে, ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করার পরেই নিরপেক্ষ নির্বাচন করার সুযোগ তৈরি হবে, পরিবেশ তৈরি হবে।’

আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আন্দোলন বলতে আপনারা কী বোঝেন, জানি না। আমরা যারা আন্দোলন করি তারা বুঝি— আন্দোলন মানে জনগণকে নিয়ে নড়াচড়া করা, জনগনকে সঙ্গে নিয়ে আসা। আমাদের প্রতিটি প্রোগ্রাম আন্দোলনের প্রোগ্রাম।’

‘এই যে আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আগামী ১২ ও ১৪ মে কর্মসূচি দিলাম, এটিও আন্দোনের প্রোগ্রাম। এই যে শাহাদাতবার্ষিকী পালন করব, এটিও আন্দোলনের প্রোগ্রাম। সবটাই সবখানে আসছে। আপনারা এত অস্থির হবেন না। আপনারা যা দেখতে চান, খুব শিগগিরই দেখতে পারবেন,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সয়াবিন তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে কর্মসূচি আসবে কি না— প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে আমরা দেড় মাস আন্দোলন করেছি। আমাদের দফা তো একটা না, দফা অনেকগুলো। আমরা রাজনৈতিক দল, আমাদের রাজনীতির মূল্য লক্ষ্য দেশের রাজনীতিকে ঠিক করা। এটা ঠিক হলে তেলের দামও ঠিক হয়ে যাবে, সরকার পরিবর্তন হলে তেলের দামও ঠিক পর্যায় আসবে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন হিসেবে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বের ৩৮ বছর পূর্তিতে তার দীর্ঘায়ু কামনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ১০ মে আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৯৮৪ সালের এই দিনে বিএনপির চেয়ারম্যানের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব লাভ করেছিলেন। এর আগে তিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। এই দীর্ঘ ৩৮ বছর তিনি এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এর মধ্যে তিনি জনগণের সমর্থন নিয়ে, জনগণের ভালোবাসা নিয়ে জনগণের ভোটে তিন বার দলকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে নিয়ে এসেছেন। দুই বার বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘সারাটা জীবন ধরেই তিনি (খালেদা জিয়া) গণতন্ত্রের জন্য, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার জন্য গত কয়েকবছর ধরে কারা অন্তরীণ আছেন। এখন তিনি গৃহবন্দি হয়ে আছেন। তারপরও তিনি গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে চলেছেন। আমরা আজ এই সভায় তাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, অভিনন্দন জানাচ্ছি, দীর্ঘায়ু কামনা করছি।’

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

টপ নিউজ মির্জা ফখরুল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর