১ লাখ ১৩ হাজার লিটার ভোজ্যতেল জব্দ, ৫ গুদাম সিলগালা
১০ মে ২০২২ ২২:১৮
রাজশাহী: রাজশাহীতে পৃথক দুইটি অভিযানে ১ লাখ ১৩ হাজার ২২০ লিটার সয়াবিন তেল ও পামঅয়েল জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে পুঠিয়া উপজেলার চারটি গুদামে ৯২ হাজার ৬১৬ লিটার তেল পাওয়া গেছে। এছাড়া গোদাগাড়ী উপজেলার বিদিরপুর গ্রামের একটি গুদামে মিলেছে ২০ হাজার ৬০৪ লিটার ভোজ্যতেল।
মঙ্গলবার (১০ মে) বিকেলে বানেশ্বর বাজারে চারটি গুদামের ভোজ্যতেলের সন্ধান পায় পুলিশ। অতি মুনাফার লোভে মজুত করে রাখার অভিযোগে তেলগুলো জব্দ করে গুদাম চারটি সিলগালা করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ পাঁচ জনকে আটকও করেছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশ, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও পুঠিয়া থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালায়। তাদের সঙ্গে দাঙ্গা পুলিশও ছিল। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এ বি এম মাসুদ হোসেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলমসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অভিযানে ছিলেন।
আরও পড়ুন- বানেশ্বরে সাড়ে ৯৩ হাজার লিটার সয়াবিন তেল জব্দ
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানে ফজলুর রহমান নামের এক ট্রাকচালককে আটক করা হয়। এছাড়া বানেশ্বরে বাজারের সরকার অ্যান্ড সন্সের মালিক বিকাশ সাহা, এন্তাজ স্টোরের মালিক এন্তাজ আলী, মেসার্স পাল অ্যান্ড ব্রাদার্সের মালিক শৈলেন পাল ও রিমা স্টোরের মালিক রাজিব সাহাকে আটক করা হয়। তারা কেউ পরিবেশক নন। তেল মজুত রাখার বিষয়ে কেউ বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। বিভিন্ন উপায়ে তেল সংগ্রহ করে মজুত করতেন তারা।
অভিযান শেষে পুলিশের দেওয়া তথ্য বলছে, সরকার অ্যান্ড সন্স থেকে ৪৮ ব্যারেল সয়াবিন ও ২৬ ব্যারেল পামওয়েল, এন্তাজ স্টোর থেকে ২২ ব্যারেল সয়াবিন ও ১২০ ব্যারেল পাম তেল, মেসার্স পাল অ্যান্ড ব্রাদার্স থেকে তিন ব্যারেল সয়াবিন ও ১০০ ব্যারেল পাম তেল, রিমা স্টোর থেকে ৪৮ ব্যারেল সয়াবিন ও ২৭ ব্যারেল পাম তেল এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুরাতন বাজারে পাঠানোর উদ্দেশ্যে বোঝাই করা একটি ট্রাক থেকে ৬০ ব্যারেল পাম তেল জব্দ করা হয়েছে।
প্রতি ব্যারেলে ২০৪ লিটার করে ভোজ্যতেল রয়েছে। সব মিলিয়ে এই চার গুদাম থেকে জব্দ করা হয় মোট ১২১ ব্যারেল সয়াবিন তেল ও ৩৩৩ ব্যারেল পাম তেল। লিটারের হিসাব বলছে, জব্দ করা মোট ৯২ হাজার ৬১৬ লিটার তেলের মধ্যে সয়াবিন ২৪ হাজার ৬৮৪ লিটার, পাম ৬৭ হাজার ৯৩২ লিটার।
রাজশাহীর এসপি এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, বেশি মুনাফার লোভে রোজার আগে থেকে এসব ব্যবসায়ী তেল মজুত করে রেখেছিলেন। বাজারে কৃত্রিম সংকটের জন্য এরাও দায়ী। তারা তেলের ব্যবসার বৈধ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। তাই সব তেল জব্দ করা হয়েছে। ভেতরে তেলগুলো রেখে গুদাম সিলগালা করা হয়েছে। যে ট্রাকে তেল বোঝাই করা হয়েছিল, সেটিও জব্দ করা হয়েছে।
এসপি জানান, আটক পাঁচ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে পুঠিয়া থানায় মামলা হবে। আর আদালতের অনুমতি নিয়ে জব্দ করা তেলগুলো ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে নায্য মূল্যে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হবে।
এদিকে, গোদাগাড়ীর বিদির এলাকায় একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে ১০১ ব্যারেল তথা ২০ হাজার ৬০৪ লিটার ভোজ্যতেল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাতে বিদিরপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ইউসুফ আলীর মাঠের মধ্যে একটি গুদামে মজুত করা তেল উদ্ধারের অভিযান চালানো হয়। ওই গোডাউন ১০১ ব্যারেল সয়াবিন তেল পাওয়া যায়, যেখানে রয়েছে ২০ হাজার ৬০৪ লিটার সয়াবিন তেল।
ওসি জানান, তেলগুলো জব্দ করে গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। এ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানে আলম।
সারাবাংলা/টিআর