Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পাতাল রেল নিয়ে সরকারের ‘ধীরে চলো নীতি’কে স্বাগত আইপিডি’র

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ মে ২০২২ ১৯:২১

ঢাকা: ঢাকা পাতাল রেল (সাবওয়ে) প্রকল্প উদ্যোগ বাস্তবায়নে সেতু কর্তৃপক্ষসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দফতরগুলো যে ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহণ করেছে তাকে স্বাগত জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)। এর আগে, সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, পাতাল রেল প্রকল্প ঢাকা নগরীর আর্থ-সামাজিক-পরিকল্পনাগত বিবেচনায় ব্যয়বহুল, উচ্চাভিলাষী ও অপরিণামদর্শী। বৃহস্পতিবার (১২ মে) আইডিপি থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়, পাতাল রেল সংক্রান্ত আইপিডি’র পর্যবেক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট সংবাদ, এ সংক্রান্ত বিশ্লেষণ আর গণমাধ্যমে প্রকাশের কারণে এই প্রকল্পের পরিকল্পনা-অর্থনৈতিক-সামাজিকসহ বিভিন্ন প্রভাবের বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দফতরগুলোর অধিকতর অনুধাবনে সহায়ক হয়েছে বলে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট মনে করে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ে গণমাধ্যমের আন্তরিক ভূমিকার জন্য আমরা আইপিডি’র পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকায় পাতাল রেল প্রকল্প নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরের বিপরীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাগরিকদের প্রতিক্রিয়ায়ও দেখা যায়, অধিকাংশই ঢাকাকেন্দ্রিক এই ধরনের অতি ব্যয়বহুল প্রকল্প গ্রহণ না করে যোগাযোগ ও পরিবহন পরিকল্পনার অন্যান্য সমাধান যেমন কমিউটার ট্রেন, লাইট রেল, মানসম্মত বাস সার্ভিস, বিআরটি প্রভৃতি তুলনামূলকভাবে ব্যয় সাশ্রয়ী উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে বিবেচনায় নেওয়ার বিষয়ে মতামত দিচ্ছেন, যা আমাদের আর্থ-সামাজিক-পরিকল্পনাগত বিবেচনায় ব্যয় সাশ্রয়ী ও সহজে বাস্তবায়নযোগ্য।

পাশাপাশি সামগ্রিকভাবে ঢাকাকেন্দ্রিক অতি বিনিয়োগ ও উন্নয়নকেন্দ্রিকতার বিপরীতে সারা দেশের আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক ও নাগরিক সুযোগ-সুবিধাদির বিকেন্দ্রিকরণের মাধ্যমে ঢাকার উপর পরিবহনসহ সামগ্রিক চাপ কমানো সম্ভব বলে পরিকল্পনাবিদ ও বিশেষজ্ঞদের বহুল উদ্ধৃত মতামতগুলো আমাদের নাগরিকদের পক্ষ থেকেও প্রতিফলিত হয়েছে।

আইপিডি মনে করে, পাতাল রেল প্রকল্প নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া ‘ধীরে চলো নীতি’র মাধ্যমে নাগরিকদের মতামতকে সম্মান দেওয়া হয়েছে, যা সরকারের জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এবং উন্নয়ন পরিকল্পনায় টেকসই ভাবনা বলে বিবেচনা করা যেতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে উচ্চ ব্যয়সম্পন্ন পরিবহন ও যোগাযোগ প্রকল্প গ্রহণের আগে গণশুনানির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়ার উপর গুরুত্ব দিলে সরকারের জন্য জনবান্ধব ও কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সহজ হবে বলে মনে করে আইপিডি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আমরা অবগত আছি যে, ঢাকায় পাতাল রেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রকল্পের জন্য ইতোমধ্যে ৩২১ কোটি টাকার সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা প্রায় শেষের পথে। এর আগে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকা-চট্টগ্রাম পথে দ্রুতগতির বুলেট ট্রেন করতে ১১০ কোটি টাকার সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শেষে প্রকল্পটিকে বাস্তববায়নের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। অনুরূপ পরিণতি হয়েছে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে উড়াল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক পথ নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ৯৮ কোটি টাকার, যেই প্রকল্প পরবর্তী সময়ে বাতিল হয়ে যায়। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর প্রকল্প লাভজনক বলে বিবেচিত না হলে প্রকল্প অনুমোদন না দেওয়ার বিষয়টি সরকার ও রাষ্ট্রের জন্য ইতিবাচক। এতে ব্যয়বহুল ও উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অর্থ ও সম্পদের অপচয় থেকে রাষ্ট্র রক্ষা পায়।

অন্যদিকে, এই ধরনের ব্যয়বহুল ও আমাদের আর্থ-সামাজিক-পরিকল্পনাগত বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যবিহীন প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে গিয়ে রাষ্ট্রের ও জনগণের মূল্যবান অর্থের যে অপচয় হচ্ছে সে ব্যাপারে রাষ্ট্র ও সরকারের গভীর দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে আইপিডি মনে করে। এই ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নামে কারো অনৈতিক উদ্দ্যেশ্য ও অর্থযোগ হচ্ছে কি না, তার ও নির্মোহ বিশ্লেষণ রাষ্ট্রের করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে এই ধরনের উচ্চাভিলাষী উন্নয়ন পরিকল্পনার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পূর্বে দেশের পেশাজীবী ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আন্তরিক আলোচনা ও প্রাক-সম্ভাব্যতা বিশ্লেষণ (প্রি ফিসিবিলিটি স্টাডি) করলে এই ধরনের অর্থের অপচয় এড়ানো যাবে বলে আইপিডি মনে করে।

আরও বলা হয়, সরকারের তরফ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি ও বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণের আগে সামগ্রিক উপযোগিতা গভীরভাবে যাচাই করে প্রকল্প গ্রহণের জন্য দেওয়া নির্দেশনা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দফতরগুলো মেনে চলবে বলে আশা করছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট। একসঙ্গে এই ধরনের বৃহৎ পরিকল্পনা উদ্যোগ ও বড় প্রকল্পগুলো ব্যাপারে সরকার বৃহত্তর জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে আগামীতেও সুচিন্তিত ও সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত নিবে বলে প্রত্যাশা করে আইপিডি।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

আইপিডি টপ নিউজ ধীরে চলো নীতি পাতাল রেল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর