Monday 21 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রেসক্লাব থেকে বহিষ্কার করায় নারী সাংবাদিকের সংবাদ সম্মেলন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ মে ২০২২ ২২:১০

সিলেট: মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন স্থানীয় সাংবাদিক এ এস কাঁকন। তিনি দৈনিক ভোরের পাতা ও দি পিপলস টাইমসের মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন এ এস কাঁকন।

এই সাংবাদিক বলেন, ‘মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের প্রথম নারী সদস্য এবং ২০২০-২০২২ সালের নির্বাচনে বিজয়ী প্রথম নারী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পাই। নারী হওয়ায় শুরু থেকেই আমার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।’

এ এস কাঁকন বলেন, ‘দুই বছর মেয়াদের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এই কমিটির সভাপতি এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্তের কাছে প্রতিনিয়ত অশোভন আচরণের শিকার হই। নানা কৌশলে সভাপতি প্রায়ই হয়রানি করেন এবং তার বাসায় যেতে বলেন। প্রথমে তার ইঙ্গিত বুঝতে না পারলেও পরবর্তী সময়ে যে কোনো বিষয়ে কথা বললে সভাপতি যখন বারবার তার বাসায় গিয়ে কথা বলার জন্য বলেন তখন বিষয়টি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি।’

‘এরপর থেকে পরিস্থিতি খারাপ হওয়া শুরু হয়। প্রতিনিয়ত আমার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দাওয়াত থেকে এমনকি সাংবাদিকতার বিভিন্ন ট্রেনিং থেকেও আমাকে বঞ্চিত রাখা হয়।’

এদিকে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে ফল উৎসব আয়োজনকে কেন্দ্র করে সভাপতি এম সালামের একান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্ত আমার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে অসত্য, ভিত্তিহীন ও সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আমাকে বহিষ্কার করেন।’

বিজ্ঞাপন

এই সাংবাদিক বলেন, ‘তবে, সভাপতি কোনো কথা না শুনে তার একক সিদ্ধান্তে সাংবাদিককে বহিষ্কার করতে বলেন। ওই সভা চলাকালে সভাপতি ‘তুই-তুকারি’ করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে অপমান করেন। কিন্তু সভাপতি সাধারণ সম্পাদক কোনো কথা না শুনে আমাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন। তবে এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের লিখিত কপি এখনও আমাকে দেওয়া হয়নি।’

‘কী কারণে তার সঙ্গে এমন আচরণ হচ্ছে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক জানান, এসব বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত সভাপতি নেন। তিনিও আমাকে পরামর্শ দেন সভাপতির বাসায় গিয়ে সব সমাধান করে নিতে। সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্য হতাশ হয়ে পড়ি। কিন্তু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কর্মকাণ্ড এখানেই সীমাবদ্ধ না থেকে আরও ভয়াবহ রূপ নেয়।’

কাঁকন বলেন, ‘এরপর থেকে কমিটির সবধরনের কার্যক্রম থেকে আমাকে বঞ্চিত রাখার পাশাপাশি পেশাগত দায়িত্বেও বাধা সৃষ্টি করে। অকারণে সবার সামনে আমার সঙ্গে অপমানজনক আচরণ করে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে কমিটির সদস্যদের নিয়ে খেলাধুলার আয়োজন করতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক সেটি করতে দেননি। কারণ হিসেবে বলেন, নারী হিসেবে এত বড় আয়োজন তুমি সামলাতে পারবে না। ক্লাবের সদস্যদের খেলাধুলার জন্য আমার ব্যক্তিগত টাকায় কিছু খেলার উপকরণ সামগ্রী প্রেসক্লাবে দিতে চাইলে সেটিও নিতে আপত্তি জানান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। এক পর্যায়ে মানসিকভাবে ভেঙে দিতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রেসক্লাবে ফল উৎসব অনুষ্ঠান আয়োজন বিষয়কে ইস্যু করে আমাকে বহিষ্কার করা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে এ.এস.কাঁকন বলেন, ‘প্রেসক্লাবের হলরুমে নির্বাহী কমিটির সভায় আমার সাথে অশালীন আচরণ করা হয়। কার্যনির্বাহী কমিটির সভা চলাকালে আমার প্রতি অন্যায় ও অশালীন আচরণের একটি ভিডিও/অডিও কপি আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।’

বিজ্ঞাপন

এসময়, তার প্রতি এই আচরণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন কাঁকন।

কাকন বলেন, ‘আমাকে বহিষ্কারের বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করি। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টককে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য বলেন হাইকোর্ট। জয়েন্ট স্টক থেকে মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবকে চিঠি দেওয়া হলেও প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। আদালতের নির্দেশনাকেও তারা অমান্য করে চলেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দের সভাপতি নাসিমুন আরা হক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল নোমান।

সারাবাংলা/একে

কাঁকন টপ নিউজ নারী সাংবাদিক মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর