Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাজে ফেরা ও বকেয়া বেতনের দাবিতে বড়পুকুরিয়ায় আন্দোলন অব্যাহত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১২ মে ২০২২ ২১:১২

দিনাজপুর: নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগদানের সুযোগসহ করোনাকালীন বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামে কর্মরত দেশি শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। মাসব্যাপী পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা বড়পুকুরিয়ায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (১২ মে) সকাল ১১টায় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি গেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শ্রমিকরা। মিছিলটি কয়লা খনি বাজার প্রদক্ষিণ করে খনি গেটে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

এসময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিকের স্ত্রী খুকু মনি, শ্রমিক নেতা জাকির হোসেন, এরশাদ আলী ও এহছানুল হক সোহাগসহ অন্যরা।

বক্তরা বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সব সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান আগের মতোই চালু হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আমাদের যোগদানের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে খনি কর্তৃপক্ষ ঘোষিত করোনাকালীন বেতন-ভাতা না পাওয়ায় আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।

শ্রমিকরা আরও বলেন, প্রায় দুই বছর আগে বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে কর্মরত ১ হাজার ১৪৭ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়া হয়। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৪০০ জন শ্রমিককে খনির ভেতরে থেকে কাজ করার শর্তে ফেরত নেয়। বাকি ৭৪৭ জনকে কাজে যোগদানের সুযোগ না দিয়ে বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে। ইদুল ফেতরের সময় খনি অভ্যান্তরে যেসব শ্রমিক অবস্থান করছিলেন, তাদেরও ছুটি দেওয়া হয়েছে।

ছুটি দেওয়ার সময় শ্রমিকদের প্রতি মাসে  ৪ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল উল্লেখ করে তারা বলেন, গত ৯ মাস ধরে তা আর দেওয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে এসব শ্রমিকদের কাজে যোগদানসহ বকেয়া পাওনা বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবি জানান তারা।

এদিকে, গত ১০ মে খনির অভ্যন্তরে মনমেলা সভা কক্ষে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে খনি কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসে। সেখানে আন্দলনকারী শ্রমিকদের মধ্য থেকে ৬০০ জনকে কাজে যোগদানের প্রস্তাব দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকরা করোনাকালীন ৯ মাসের বকেয়া ভাতাসহ সব শ্রমিককে কাজে পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে ওই আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে চলমান অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।

এর আগে, এসব দাবি নিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন গত ১১ এপ্রিল খনি কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপিও দেয়। ওই দিন থেকেই ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন শ্রমিকরা।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান বলেন, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কথা বলে প্রথমে ৪০০ জন শ্রমিককে কাজে যোগদান এবং পরে আরও ২০০ শ্রমিকসহ মোট ৬০০ জন শ্রমিককে কাজে যোগদানের বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা প্রত্যাখ্যান করে খনি গেট উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। ফলে বিষয়টি আর এগোয়নি।

সারাবাংলা/টিআর

অবস্থান কর্মসূচি বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক আন্দোলন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর