ঢাকার সড়কে ‘চোর-পুলিশ খেলা’ হচ্ছে: মেয়র আতিক
১৫ মে ২০২২ ০৯:৩৫
ঢাকা: রাজধানীর সড়কে ‘চোর-পুলিশ খেলা’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। রাস্তার উপরে কোনো কিছু রাখা যাবে না এমন নিয়ম থাকলেও রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তার উপরে বিভিন্ন ধরনের আইটেম রাখার পাশাপাশি দোকানপাটও করা হয়। রাস্তায় যানজট তৈরি করা এসব দোকানপাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে একজন বলে এটা পুলিশের, পুলিশ বলে এটা কাউন্সিলরের, আবার আরেকজন বলে রাজনীতিকের। এভাবে দেখা যায় সেখানে চোর-পুলিশ খেলা হচ্ছে প্রতিদিন।
শনিবার (১৪ মে) ডিএনসিসি’র নগর ভবনে আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছর পূর্তিতে এই মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আতিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তার উপরে কোনো আইটেম রাখা যাবে না। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ঢাকার বিভিন্ন রাস্তার উপরে বিভিন্ন ধরনের আইটেম রাখা হয়, এমনকি দোকানপাটও করা হয়। বলতে গেলে একজন বলে এটা পুলিশের, পুলিশ বলে এটা কাউন্সিলরের, আবার আরেকজন বলে রাজনীতিকের। আসলে রাস্তায় বিভিন্ন আইটেম— যেগুলো যানজট তৈরি করে, সেখানে চোর-পুলিশ খেলা হচ্ছে প্রতিদিন।
মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রশ্ন তুলে বলেন, হাতিরঝিলের জন্য কারওয়ান বাজারে বিজিএমই ভবন ভাঙতে পারলে মহাখালীতে সেতু ভবন ও সড়ক ভবন কেন ভাঙা যাবে না?
তিনি বলেন, বনানী থেকে শুরু করে উত্তরা পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে এই সেতু ভবন আর বিআরটিএ ভবনের জন্য, রাস্তার উপরে সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে এই ভবন দুটি করা হয়েছে। এখানে আগে অনেক গাছ ছিল সব কেটে করা হয়েছে সেতু ভবন আর বিআরটিএ ভবন। এ সময় সেতু ভবন ভেঙে ফেলার আহ্বান জানান তিনি।
দায়িত্ব গ্রহণের দুই বছরের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ১৩টি খেলার মাঠ উন্মুক্ত করতে পেরেছি। বাকি যে মাঠ আছে তা আগামী জুলাইয়ের মধ্যে উন্মুক্ত করা হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়েছি। রোদ নাই, বৃষ্টি নাই, আমরা ৫৪টা ওয়ার্ডে গিয়েছি। আমরা যদি বাড়ি বাড়ি যাই তাহলে জনগণ আরও সচেতন হবে।
তিনি বলেন, মাদক মুক্ত করার জন্য আমরা মেয়র কাপ ও পারা উৎসব করেছি। সমাজকে বাঁচাতে গেলে খেলার কোনো বিকল্প নাই। শিশুদের মানসিকভাবে আমরা তৈরি করতে না পারলে তারা হারিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, বাসা বাড়ির বর্জ্য খালে না ফেলে আলাদা ব্যাবস্থা করতে পেরেছি। আমার নিজের বাসা দিয়েই আগে শুরু করেছি। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে চুক্তি করে ফেলেছি। আমরা এটা করতে পারলে খালে মাছ চাষ করতে পারব। মশার জন্য আমরা মাছ চাষ করতে পারি না।
মেয়র বলেন, বায়ু দূষণ কমাতে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। সিটির ৩২ হাজার এলইডি লাইট বন্ধ ও চালু করার নিয়ন্ত্রণ আমরা মোবাইল ফোনে নিয়ে এসেছি। মিরপুরে পশু লাভার ও বৃক্ষ লাভারদের জন্য আমরা আলাদা জায়গা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের যারা মারা যাবে তাদের ৮ লাখ টাকা এবং যারা আহত হবেন তাদের ৪ লাখ টাকা দেয়ার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাতিরঝিল থেকে ব্রিজ দিয়ে ২০ মিনিটেই কালাচাঁদ পিউর আসার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। যা এখন আসতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। সকলের সহযোগিতায় সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছি।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, কাউন্সিলর ও ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সারাবাংলা/এসবি/এনএস