পতিত জমি চাষে সবধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
১৫ মে ২০২২ ১৮:৪৩
ঢাকা: কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই ও আরও মজবুত করতে হলে চরাঞ্চল, উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকা, পাহাড়ি প্রতিকূল এলাকার জমিকে চাষের আওতায় আনতে হবে। কোনো জমি অনাবাদি রাখা যাবে না। পতিত জমি চাষের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। পতিত জমিতে যারা চাষ করবে তাদের সবধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।
রোববার (১৫ মে) নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চর জব্বার ও বিএডিসি খামারে সয়াবিন, ভুট্টা ও সূর্যমুখীর মাঠ পরিদর্শন এবং কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএডিসি‘র চুক্তিবদ্ধ চাষীদের সয়াবিন বীজ ফসলের মাঠ পরিদর্শনকালে মন্ত্রী চরাঞ্চলে অবস্থিত অনাবাদি পতিত জমিতে তেল জাতীয় ফসল সয়াবিন, সুর্যমুখী ও সরিষার আবাদ বাড়ানোর জন্য পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘তেল জাতীয় ফসল আবাদে উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশি। এ বিষয়ে কৃষিবান্ধব শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় বীজ, সার, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ সবধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে।’
চাষিদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘নোয়াখালীর অনাবাদি পতিত জমিগুলোকে আবাদের আওতায় আনতে আউশ ধানের উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করেছে আমাদের বিজ্ঞানীরা। আপনারা স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন অধিক ফলনশীল এ জাতগুলো রবি ফসল কাটার পর পরই আবাদ করবেন। চাষাবাদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সহযোগিতা দিতে বিএডিসি বীজ, সার ও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছে। জাতগুলো কৃষকের কাছে সম্প্রসারণের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর প্রতিটি ইউনিয়নে কাজ করছে ‘
মন্ত্রী বলেন, ‘লবণাক্ততা উপকুলীয় এলাকার একটি অন্যতম সমস্য। লবণাক্ত জমিতে চাষোপযোগী জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। লবণাক্ত এলাকায় লাউ, শিম, তরমুজ, সুর্যমুখী, মিষ্টি আলু ও সয়াবিন ফসলের ফলন ভাল হয়। এ ফসলগুলোর ক্রপিং প্যাটার্নে অন্তর্ভুক্ত করে চর এলাকার প্রত্যেকটি জমি আবাদের আওতায় আনতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, আধুনিকীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছে।’
এ সময় কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বিএডিসির সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, সুগারক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন, বিএডিসির সুবর্ণচর প্রকল্পের পরিচালক আজিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘খালেদা জিয়ার অবর্তমানে যিনি বিএনপি চালাবেন সেই তারেক রহমান লন্ডনে বসে ভোগবিলাস করছেন, রিমোট কন্ট্রোলে দল চালাচ্ছেন। আর সেই রিমোট কন্ট্রোলে দল চালিয়ে, হুমকি দিয়ে আওয়াজ তুলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। ক্ষমতায় আসতে হলে মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষের দুঃখ কষ্টের সঙ্গী হতে হবে।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো পর্দার অন্তরালে ষড়যন্ত্র করে নীলকুঠি, লালকুঠিতে বসে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। আমাদের ভিত্তি জনগণ। আমরা জনগণকে নিয়ে এগোচ্ছি। জনগণ যদি আমাদের প্রত্যাখ্যান করে আমরা চলে যাব। এটা নিয়ে আমাদের কোনো দুঃখ নেই।’
ভারত গম রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় ও বোরোতে ধানের কিছু ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় চালের দাম বাড়বে কি না?- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এবছর বোরোতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। হাওরে ও সারাদেশে বৈরি আবহাওয়ায় যা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা সামান্য। বোরোতে আশানুরূপ ফলন পাবো। ফলে, চালের দামে প্রভাব পড়বে বলে মনে হয় না।’
তিনি বলেন, ‘একদিকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, অন্যদিকে ভারত গম রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় মিলাররা বেশি বেশি করে ধান কিনছে। সেজন্য, ভরা মৌসুমেও চালের দাম কমছে না।’
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম