‘ঢাকায় বসে সমালোচনা করবেন না, সারাদেশ ঘুরে দেখে আসুন’
১৬ মে ২০২২ ১২:৫৬
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ঢাকায় বসে অনেকে সমালোচনা করেন, তাদেরকে আমার অনুরোধ থাকবে সারাদেশটা আপনারা ঘুরে দেখুন, পরিবর্তনটা কোথায় এসেছে, কতটুকু এসেছে? গ্রামপর্যায়ে গিয়ে একটু যোগাযোগ করলে সেটা জানতে পারবেন।
সোমবার (১৬ মে) এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ক দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলন-২০২২ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।
সরকারের টানা মেয়াদে শতভাগ বিদ্যুৎতায়ন, মেগাপ্রজেক্ট বাস্তবায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ নানামুখী উন্নয়ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর সুফলটা দেশের মানুষ পাচ্ছে। অনেকেই হয়ত এখন সমালোচনা করেন, এটা করা হচ্ছে কেন বা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন করা হল? এতো টাকা খরচ হয়েছে, খরচের দিকটা শুধু অনেকে দেখেন। কিন্তু এই খরচের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ যে কতটা লাভবান হবে এবং আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে, আমাদের উন্নয়ন গতিশীল হবে, মানুষের জীবন পরিবর্তন হবে, সেটা বোধহয় তারা বিবেচনা করেন না। এটা খুব দুঃখজনক।
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ নদীমাতৃক। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নটা একান্তভাবে অপরিহার্য্য। যোগাযোগ যত দ্রুত বৃদ্ধি পাবে, পণ্য পরিবহন বৃদ্ধি পাবে, মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে এবং একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করা সহজ হবে। যেটা আমাদের অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করবে। দারিদ্র্য বিমোচনে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের তৃণমূলের মানুষ সব থেকে বেশি লাভবান হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন সবাই কথা বলতে পারেন, টকশো করতে পারেন। অবশ্য আমি জানি অনেক কথা বলার পর বলবেন, আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। কিন্তু টকশোতে যখন কথা বলেন, তখন তো কেউ আপনাদের মুখ চেপেও ধরেনি বা গলা টিপেও ধরেনি। সবাই যারযার ইচ্ছামতো বলতে পারেন।
একপাক্ষিক সমালোচনা না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে আমি বলব, আগে বাংলাদেশটা একটু ঘুরে আসেন, গ্রাম পর্যায়ে যান, সেখানে মানুষ কী অবস্থায় আছে একটু দেখে এসে তারপর কথা বললে, আপনারা হয়ত জানাতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের কৃষক, আমাদের দেশের শ্রমিক, আমাদের দেশের খেঁটে খাওয়া মানুষ; এই খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনই আমার লক্ষ্য। এই কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে, তাদের একটু উন্নত জীবন দেবো, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি আরও বলেন, এসডিজিতে যে সমস্ত বিষয়গুলো, যেগুলো আমাদের জন্য প্রযোজ্য আমরা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি এবং বাস্তবায়ন করে যাব। কাজেই এই সমস্ত প্রকল্পগুলো যখন সম্পূর্ণ হবে এবং মানুষ শুভফল যখন ভোগ করবে, তখন এদেশের অর্থনীতির চাকা আরও উন্নত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করলে ২০৩০ এর আগেই আমরা নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবো। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সেটা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করব। সেই লক্ষ্য অর্জন করবার জন্যই সবাইকে আহ্বান জানাই।
বাংলাদেশ ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে তুলবো, জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করবো বলেও অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সম্মেলন উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, জুয়েনা আয়িজ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, এছাড়া সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য এবং সচিব ড. মো. কাউসার আহাম্মদ এসডিজি বিষয়ক একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন।
সারাবাংলা/এনআর/এএম