পেনশনের ফাইল আটকে ঘুষ, বিটিসিএল’র ২ কর্মীর কারাদণ্ড
১৬ মে ২০২২ ১৮:৪৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: কর্মকর্তার অবসরজনিত ভাতার (পেনশন) ফাইল আটকে ঘুষ গ্রহণের মামলায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) বরখাস্ত দুই কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে সোমবার (১৬ মে) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে দণ্ডিতরা হলেন- বিটিসিএল’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী (ফোনস-অভ্যন্তরীণ) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী কাম ক্যাশিয়ার মো. গিয়াস উদ্দিন ও টেলিফোন অপারেটর মো. হুমায়ুন কবির।
এদের মধ্যে গিয়াস উদ্দিনকে দণ্ডবিধির ১৬১ ও ১৬৫ (ক) ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। এছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় একই সাজা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া হুমায়ুন কবিরকে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দণ্ডবিধির ১৬১ ও ১৬৫ (ক) ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
দুই আসামিকে দেওয়া পৃথক সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেছেন।
মামলার নথিপত্রের ভিত্তিতে দুদকের কৌঁসুলি কাজী ছানোয়ার হোসেন লাবলু সারাবাংলাকে জানান, বিটিসিএল’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী (ফোনস-অভ্যন্তরীণ) কার্যালয় থেকে অবসরে যাওয়া উপ সহকারী প্রকৌশলী আবুল কাশেম ভূঁইয়ার পেনশনের ফাইল আটকে ঘুষ দাবি করেন গিয়াস ও হুমায়ুন। অভিযোগ পেয়ে তাদের গ্রেফতারের ফাঁদ পাতে দুদক। ২০১৬ সালের ১৭ আগস্ট দুপুর ১টার দিকে কার্যালয়ে অবস্থান নেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাব্বির রহমানসহ দুদকের একটি টিম।
আবুল কাশেম ভূঁইয়া পেনশনের ফাইল ছাড়ের জন্য দু’জন ২০ হাজার টাকা দেওয়ার পর হাতেনাতে তাদের ধরে ফেলেন দুদকের কর্মকর্তারা। দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়-১ এর তৎকালীন উপ সহকারী পরিচালক মানিকলাল দাশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গিয়াস ও হুমায়ুনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ওই সময় বিটিসিএল থেকে তাদের বরখাস্ত করা হয়।
তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২১ মে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। ২৪ মে তাদের বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নিয়ে মামলা বিচারের জন্য বিচারিক আদালতে পাঠানো হয়। ২৩ জুলাই বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে মামলা বিচারের জন্য গ্রহণ করা হয়। ২৪ জুলাই দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। চলতি বছরের ১১ এপ্রিল যুক্তিতর্ক শুনানি হয়। আসামিরা সাফাই সাক্ষ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।
গ্রেফতার গিয়াস ও হুমায়ুন জামিনে জেল থেকে বের হয়ে আদালতে নিয়মিত হাজিরা দেন। সর্বশেষ রায় ঘোষণার সময়ও তারা আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর গিয়াসকে কারাগারে পাঠানো হয়। হুমায়ুনের দণ্ডের মেয়াদ এক বছর হওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৪২৬ (২) ধারা অনুযায়ী আপিলের শর্তে আসামির আবেদনের ভিত্তিতে তাকে ৩০ দিনের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম