বিড়ি নিয়ে ‘বহুজাতিক কোম্পানির ষড়যন্ত্রে’র প্রতিবাদে মানববন্ধন
১৭ মে ২০২২ ২২:৩৫
ঢাকা: দেশের প্রাচীন শ্রমঘন বিড়ি শিল্প নিয়ে বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বগুড়া জেলা বিড়ি শ্রমিক ও কর্মচারী ঐক্য ইউনিয়ন।
সংগঠনটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার (১৭ মে) বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অফিসের সামনে পাঁচ দফা দাবিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী বাজেটে বিড়িতে বিদ্যমান শুল্ক কমানো, বিড়ির ওপর অর্পিত অগ্রিম ১০ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহার, বিড়ি শ্রমিকদের সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সরজমিনে পরিদর্শন ছাড়া বিড়ি কারখানার লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ করা এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে নকলবাজদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান শ্রমিকরা।
মানববন্ধন শেষে বগুড়া কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগের ডেপুটি কমিশনারের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দেন শ্রমিক নেতারা।
বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হারিক হোসনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা বিড়ি শ্রমিক ও কর্মচারী ঐক্য ইউনিয়নের আহ্বায়ক জয়নাল আবেদিন।
মানবন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিড়ি শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এম কে বাঙালী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, সহসভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল গফুর, প্রচার সম্পাদক শামীম ইসলাম, কার্যকরী সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের প্রাচীন শ্রমঘন বিড়ি শিল্পে সমাজের অসহায়, সুবিধাবঞ্চিত, হতদরিদ্র, শারীরিক বিকলঙ্গ, বিধবাসহ লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। অথচ বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির ষড়যন্ত্রে দেশের প্রাচীন শ্রমঘন এ শিল্পটি ধ্বংস করা হচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলো এ দেশের মানুষের ফুসফুস পুড়িয়ে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে। এ দেশীয় কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা বিদেশি এসব কোম্পানির কাছে সুবিধা পেয়ে বিড়ির ওপর মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে।
বক্তারা বলেন, বিড়ি মালিকরা এই মাত্রাতিরিক্ত করের বোঝা সহ্য করতে না পেরে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে বিড়ি কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকরা কর্ম হারিয়ে অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন। আমরা দেশের এই লাখ লাখ বিড়ি শ্রমিকদের জীবন-জীবিকার অবলম্বন বিড়ি শিল্পকে রক্ষার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি সিগারেট কোম্পানিগুলোকে একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ করে দিতে কিছু অসাধু আমলা বিড়ির ওপর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে শুল্ক বাড়াচ্ছে। শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা শুল্ক ফাঁকি দিতে জাল ব্যান্ডরোল ও ব্যান্ডরোল ছাড়াই নকল বিড়ি তৈরি করে বাজারজাত করছে। ফলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি বিড়ি শিল্প ও শ্রমিক ধ্বংস করতে বিড়ি শ্রমিকদের প্রকৃত সংখ্যা গোপন করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
এছাড়াও বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানির যোগসাজশে কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা সরজমিনে পরিদর্শন ছাড়াই অস্তিত্ববিহীন বিড়ি কারখানার লাইসেন্স দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। বলেন, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিড়ি শ্রমিকদের নিয়ে ষড়যন্ত্র হলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর
বগুড়া জেলা বহুজাতিক কোম্পানির ষড়যন্ত্র বিড়ি শিল্প বিড়ি শ্রমিক ও কর্মচারী ঐক্য ইউনিয়ন