প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শিশু খুন: তিন জনের মৃত্যুদণ্ড
১৮ মে ২০২২ ১৩:৪৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে পানির ট্যাংকে ফেলে দুই বছরের শিশুকে হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৮ মে) দুপুরে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিন এ রায় দিয়েছেন।
দণ্ডিতরা হলেন- মো. ফরিদ, মো. হাসান ও তার মা নাজমা বেগম।
২০২০ সালের ৭ জুন নগরীর বাকলিয়া থানার মিয়াখান নগরের ম্যাচ ফ্যাক্টরি রোডে একটি ভবনের ছাদে পানির ট্যাংক থেকে দুই বছর বয়সী আবদুর রহমান আরাফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ভবনটির মালিক চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর নুরুল আলম মিয়া। নিহত আরাফ নুরুল আলমের ভাড়াটিয়া আবদুল কাইয়ুমের ছেলে।
এ ঘটনায় আরাফের বাবা আবদুল কাইয়ূম বাদি হয়ে বাকলিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে ঘটনার পরই নুরুল আলমের বাড়ির দারোয়ান হাসান ও তার মা নাজমা বেগম এবং পরবর্তীতে পাশের ভবনের ভাড়াটিয়া ফরিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাসান ও নাজমা নুরুল আলমের ভবনেই বসবাস করতেন।
পরবর্তীতে গ্রেফতার নাজমার জবানবন্দি ও পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, ফরিদ দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী ছিলেন। নুরুল আলম আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী। নুরুল আলমের প্রচারণা মিছিলে হামলার অভিযোগে ফরিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এতে ক্ষুব্ধ ফরিদ নুরুল আলমকে ফাঁসানোর ফাঁদ খুঁজছিলেন। ঋণগ্রস্ত নাজমা ও তার ছেলেকে ২০ হাজার টাকার প্রলোভন দেখিয়ে নুরুল আলমকে ফাঁসানোর ফাঁদ তৈরি করে।
তিন জনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের ৬ জুন আদর করার ছলে আরাফকে বাড়ির ছাদে তুলে নাজমা পানির ট্যাংকে ফেলে হত্যা করে। আরাফকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশকে জানানোর পর পরদিন লাশ উদ্ধার হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অতিরিক্ত পিপি প্রবীর কুমার ভট্টাচার্য সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, আরাফকে খুনের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল শেষে ২০২১ সালের ১০ মার্চ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে ২০ জন ও আসামিপক্ষে ১০ জনের সাফাই সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত।
তিন আসামির মধ্যে দু’জন কারাগারে ও একজন জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার সময় তিনজনই হাজির ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
সারাবাংলা/আরডি/এসএসএ