সয়াবিন-সরিষা সব তেলই ভোক্তাদের নাগালের বাইরে
২১ মে ২০২২ ২২:৫০
ঢাকা: বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্গে বেড়েছে সবধরনের ধরনের ভোজ্য তেলের দাম। সয়াবিন তেলের কিনতে না পারাদের সরিষার তেলও কেনার সুযোগ নেই। কারণ, ইতোমধ্যে সরিষার তেলের দামও কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা বেড়েছে।
২০ ও ২১ মে (শুক্র ও শনিবার) রাজধানীর বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার এবং মুদি দোকানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খোলা সরিষার তেল গত এক মাসের তুলনায় কেজিতে একশ’ টাকা বেড়েছে। এর বাইরেও প্রতিদিনই তেল কিনতে গেলে বাড়তি দাম চাইছেন দোকানিরা। এই নিয়ে ক্রেতারা দারুণ অসন্তুষ্ট।
ঢাকার কাঁচাবাজারগুলোতে একেক দোকানে সয়াবিনের একেক রকম দাম রাখতে দেখা গেছে। তবে কোথাও বোতলজাত সয়াবিন ২০০ টাকার কমে মিলছে না। দোকান ও ব্র্যান্ড ভেদে ২১০ বা ২১৫ টাকাও দাম রাখছেন অনেকে। আর খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত। আর এর চেয়ে সামান্য কমে খোলা পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা লিটার।
তবে সয়াবিন আর পামের দাম বাড়ার সাথে সাথে সাধারণ ভোক্তারা প্রায় একই দামে সরিষা কিনতে পেরেছিল। এরপরই সুযোগ বুঝে এই তেলের ব্যাপারীরা কেজিতে ১০০ টাকারও বেশি দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন সরিষার নিয়মিত ভোক্তারাও রান্নার জন্য তেলটি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন, কেউ কেউ কিনছেন প্রয়োজনের অর্ধেক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকায় তিন প্রকারের সরিষার তেল পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে মেশিনে ভাঙানো তেল, বোতলজাত এবং ঘানি ভাঙানো। স্থানীয়ভাবে মেশিনে ভাঙানো তেল বর্তমানে প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক মাস আগেও মেশিনে ভাঙা সরিষার দাম ছিল প্রতি কেজি ১৮০ টাকা। আবার আজিমপুরের মতো সরকারি কলোনী কেন্দ্রিক এলাকাগুলোতে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে সরিষা। বোতলজাত সরিষার দাম ৩৫০ থেকে ৩৭০ টাকা রাখা হচ্ছে। এছাড়াও ঘানি ভাঙানো তেল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার প্রায় সব কাঁচা বাজারেই দামের এই একই অবস্থা।
ক্রেতারা বলছেন, সয়াবিন তেল সংকটের পর থেকেই সরিষার দাম বাড়িয়েছে ধান্ধাবাজ ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা অবশ্য বলছেন, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিগুলো তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পাইকাররাও নিজেদের মজুতে থাকা তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সেজন্য সরিষার বাজার এমন টালমাটাল।
খুচরা দোকানিরা এই ঘটনাকে অভাবনীয় বলছেন। কারণ নিকট অতীতে সরিষার তেলের দাম কখনোই এক লাফে এতটা বাড়েনি। এই তেল রান্নার চেয়েও বেশি শখের খাবারে ব্যবহৃত হতো বলে এর দাম অনেক দিন থেকেই স্থিতিশীল ছিল। মেশিন মালিকরা বলছেন, দেড় হাজার টাকার সরিষা দানা এখন সাড়ে তিন হাজার টাকায় কিনতে হয়। মেশিন খরচ, ডিজেল খরচ আর ঢাকা শহরের ভুতুড়ে দোকান ভাড়া হিসাব করে বলুন ২০০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব কি না?
রায়হান নামে এক মেশিন মালিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবাই লাভের জন্য বিভিন্ন ব্যবসা করেন, আমরাও করি। বড় বড় খেলোয়াড়ের জন্য তেলের দাম বাড়ে, আপনারা এসে দোষ দেন আমাদের। খোঁজ নেন তেলের দাম কারা বাড়ায়? তাদের গিয়ে জিজ্ঞেস করেন, তেলের দাম এত বেশি বাড়ল কেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘নিজে তেল উৎপাদন করি, তাও এখন নিজেই এই তেল বাসার জন্য নিতে পারি না। কারণ উৎপাদন খরচ বেশি।’
সারাবাংলা/টিএস/পিটিএম