কিশোর-কিশোরীর মানসিকতা ও মাতৃস্বাস্থ্যে ঝুঁকি বাড়ছে
২২ মে ২০২২ ০৯:০৫
কিশোর-কিশোরীর শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি চিন্তা-ভাবনাতেও ঘটে ব্যাপক পরিবর্তন। ওই সময় বিষণ্ণতা-হতাশা-উদ্বেগ সহ ভুল পথে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। একইভাবে গর্ভবতী নারীদেরও শারীরিক পরিবর্তনের সঙ্গে ঘটে মানসিক পরিবর্তন। ওই সময় সঠিক সেবা না পেলে, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে মাতৃস্বাস্থ্য। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এই দুই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও কাজ করছে সরকার।
তারই অংশ হিসেবে কক্সবাজারের ৭১টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভায় মাতৃস্বাস্থ্য, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা গ্রহীতার হার বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে ‘হেলথ এন্ড জেন্ডার সাপোর্ট প্রকল্প’। তারা কিশোর-কিশোরীর শারীরিক মানসিক পরিবর্তন ও নারীদের গর্ভকালীন চিকিৎসা সেবা প্রদানের পাশাপাশি নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কাউন্সেলিং করছে।
সম্প্রতি মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালী ‘ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ‘মা ও কিশোরী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে ছিল গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসা সেবার কর্নার, কিশোর-কিশোরীদের সেবা ও কাউন্সেলিং কর্নার, জেন্ডার বেইজ ভায়োলেন্স কর্নার, গর্ভবর্তী মায়েদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টিগুণ বিষয়ক কর্নার, রক্তদান কর্নার, যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্নার। এছাড়া কিশোর-কিশোরী ও নারীদের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি নাটক ও লোকগানের আয়োজন করা হয়। যেখানে নাটক ও লোকগানের মাধ্যমে সচেতন করা হয়।
এই আয়োজনে বিনামূল্যে সেবা নিতে আসা রাবেয়া খাতুন নামে গর্ভবর্তী এক নারী জানান, এখানে এসে ফ্রি’তে চিকিৎসা পাচ্ছেন। ওষুধ পেয়েছেন। অনেক ভুলের সহজ সমাধান পেয়েছেন। গর্ভকালীন সময়ে কী করতে হবে, আর কী করা যাবে না, তার পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন।
দশম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোর বিপ্লব কান্তি বলে, কিশোর কী, বয়ঃসন্ধিকাল কী, এসব বিষয় আমাদের জীবনে কী পরিবর্তন আনে, তা জানতে পেরেছি। এছাড়াও ওই সময় শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের বিষয়ও জানতে পেরেছি। কৈশোরকালে সুন্দরভাবে জীবনযাপনের সঠিক দিক-নির্দেশনাও পেয়েছি।
নবম শ্রেণির ছাত্রী কিশোরী সাইমা সাদিয়া বলে, বয়ঃসন্ধিকাল নিয়ে অনেক কিছু অজানা ছিল। যা এখানে এসে জানতে পেরেছি। এছাড়া এখানে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা গেছে, যা আগে জানা ছিল না।
আয়োজকদের মধ্যে পিএইচডির ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, হেলথ এন্ড জেন্ডার সাপোর্ট প্রকল্পের আওতায় জেলার ৭১টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভায় মাতৃস্বাস্থ্য, কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা গ্রহীতার হার বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। মায়েদের নিরাপদ ডেলিভারি ও কিশোর-কিশোরীদের কাউন্সেলিং ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে। স্কুল থেকে ঝরে পড়া কিশোর-কিশোরীর প্রাধান্য রয়েছে বেশি। জোর দেওয়া হচ্ছে বাল্যবিবাহ বন্ধে। এই সংস্থা সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে সরকারের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে কাজ করছে।
কার্যক্রম পরিদর্শনে আসা কক্সবাজার মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন জানান, শহরের তুলনায় গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোকে কিশোর-কিশোরী এবং মায়েদের স্বাস্থ্য ও মানসিক সেবা অনেকটা পিছিয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে এই সেবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই সমাবেশের আয়োজন করে পার্টনার্স ইন হেলথ এন্ড ডেভেলপমেন্ট (পিএইচডি)। এর সার্বিক সহযোগিতা করে মহেশখালী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা। কিশোর-কিশোরীর মানসিকতা ও মাতৃস্বাস্থ্যে ঠিক রাখতে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলছেন সচেতন মহল।
সারাবাংলা/এএম