ভাসানটেক সরকারি কলেজে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ
২২ মে ২০২২ ১৬:০৩
ঢাকা: রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২১ মে) কলেজের স্বাধীনতা মিলনায়তনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করা হয়।
বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাসানটেক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন। প্রধান অতিথি হিসেবে দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্রীড়া এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক এবং কলেজের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান রফিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক আতিয়া খন্দকার, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (মনিটরিং অ্যাণ্ড ইভ্যালুয়েশন) অধ্যাপক আমির হোসেন, পরিচালক (ঢাকা অঞ্চল) অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান অতিথিরা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি স্মারক ‘বাংলাদেশের হৃদয় হতে’ ম্যুরালে পুষ্পস্তবক প্রদান করেন, বৃক্ষরোপন করেন এবং শেখ রাসেল দেয়ালিকা কর্নার পরিদর্শন করেন। তিনি কলেজের আইটি ও ভাষা ল্যাবও উদ্বোধন করেন। মিলনায়তনে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন শেষে সদ্য প্রয়াত বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে পুরস্কার দেওয়া হয়। শেষ পর্বে উপস্থিত অতিথিরাসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তারা শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ মানসিক ও শারীরিক বিকাশে শিক্ষার পাশাপাশি ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার উন্মুক্ত সুযোগ জরুরি বলে মন্তব্য করে কলেজে পড়াশুনার পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক খেলাধুলা ব্যবস্থার ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সাথে মানবিক গুণাবলি অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তারা বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি খেলাধুলা, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা, সামাজিক কর্মকাণ্ড, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের অংশীদারিত্ব সমন্বয় করে চলতে হবে। অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা যে জ্ঞান অর্জন করছি সেটা যেন আমাদের বাস্তব জীবনে কাজে লাগাতে পারি। শুধু পড়া লেখায় নয়, ভাল মানুষ এবং সুনাগরিক হতে হলে খেলাধুলার এবং শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চার কোনো বিকল্প নেই। এসব কর্মকাণ্ড উন্নত জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা যেমন রাখে, তেমনি আমাদের শরীর ও মনকে সতেজ রাখে। সেইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই বঙ্গবন্ধু,ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ দেশের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে এবং শৃঙ্খলার সঙ্গে জীবন পরিচালিত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা আরও বলেন, শিক্ষা, খেলাধূলা এবং সংস্কৃতি একে অপরের পরিপূরক। ক্রীড়া, শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের সুনাগরিক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চায় সমান গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারা আরও বলেন, প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শিশুদের মেধা ও মননের বিকাশ ঘটে। শিক্ষার্থীদের শুধুমাত্র পড়ালেখা করলে হবে না, এর পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসাবে ক্রীড়া, শিল্প-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চা নিয়মিতভাবে করতে হবে। তবেই শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা, মননশীলতা বিকশিত হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীকে ভালো ছাত্র হওয়ার আগে অবশ্যই একজন মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন ভালো মানুষ হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে ‘সোনার মানুষ’ হিসেবে গড়ে উঠতে শিক্ষার্থীদের আন্তরিক প্রয়াসী হওয়ার প্রতিও সকলে আহ্বান জানান।