ঢাকা: দশ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম আদালতে জামিন শুনানি চলাকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে এজলাস কক্ষের বেঞ্চে শুইয়ে রাখা হয়। কেল ৫টার কিছু সময় পর তাকে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে কারাগারে নেওয়া হয়। হাজী সেলিমকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় তার সমর্থকরা কান্নায়ও ভেঙে পড়েন।
রোববার (২২ মে) বিকেল ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক শহিদুল ইসলামের আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন হাজী সেলিম। আদালত শুনানি শেষে তার জামিন নামঞ্জুর করেন৷
এদিকে হাজী সেলিমের সমর্থকরা আগে থেকেই আদালতে জড় হন। ভীড় ঠেলে তিনি এজলাসে প্রবেশ করেন। এজলাসে ঢুকেই তিনি সামনের একটি বেঞ্চে বসে পড়েন। তার তিন ছেলেও তার পাশে গিয়ে দাঁড়ান। এ সময় হাজী সেলিমের কিছু সমর্থকও এজলাসে ঢুকে পড়েন। আইনজীবী, সাংবাদিক, পুলিশ ও তার সমর্থকদের উপস্থিতিতে আদালত কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
যার ফলে বিচারিক কাজ শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হয়। ৩টা ২০ মিনিটের দিকে বিচারক এজলাসে ওঠেন। কিছু সংখ্যক আইনজীবীকে কক্ষে থাকতে বলেন আদালত। অন্যদের বের হয়ে যেতে বলা হয়।
এ সময় হাজী সেলিম বেঞ্চ থেকে উঠে তার সমর্থকদের বের হয়ে যেতে বলেন। শুনানি শুরু হলে তিনি আসামির কাঠগড়ায় গিয়ে দাঁড়ান। শুনানিকালে পুরোটা সময় তিনি কাঠগড়াতেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
আসামিপক্ষ এবং দুদকের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে হাজী সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে প্রিজন ভ্যান আসার আগপর্যন্ত তাকে আদালতে থাকতে বলা হয়। পরে আবার বেঞ্চে এসে বসেন হাজি সেলিম। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে উঠে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে যান হাজী সেলিম।
আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলার কিছুক্ষণ সময়ের জন্য অসুস্থ হয়ে পড়েন হাজী সেলিম। আদালতের একটি বেঞ্চে শুয়ে পড়েন তিনি। বিকেল ৫টার কিছু সময় পর তাকে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে হাজী সেলিম সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে প্রথম শ্রেণির মর্যাদা (সিআইপি মর্যাদা) ও কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পেতে যে আবেদন করেছিলেন, সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে হাজী সেলিমের ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। সেই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আপিল করলে হাইকোর্টও সেই সাজা বহাল রাখেন। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় গত ১০ ফেব্রুয়ারি। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এ আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।