Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জুনের শেষ দিকে সেতু উদ্বোধন, প্রথম সপ্তাহেই আলোকিত হবে পদ্মা

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৩ মে ২০২২ ১১:১৪

ঢাকা: পদ্মাসেতু এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। এক সময়ের স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান। উত্তাল পদ্মার বুক চিরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে স্বপ্নের সেতু। এই সেতুর কাজ প্রায় শেষ পথে। আর বাকি আর মাত্র ২ শতাংশ কাজ। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা। জুনের শেষ নাগাদ সেতুটি উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মাসের প্রথম সপ্তাহেই আলোয় সাজবে পুরো পদ্মাসেতু। সেতু সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্র বলছে, এখন রোড মার্কিং, সেতুতে বিদ্যুতের লাইন দেওয়াসহ শেষ মুহূর্তের টুকিটাকি কাজ চলছে। এছাড়া সেতুর দুই প্রান্তে দু’টি ম্যুরাল নির্মিত হচ্ছে। সেগুলোরও নির্মাণ কাজও এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। প্রতিটি ম্যুরাল হবে ৪০ ফুট উঁচু। সব মিলে সেতুর কাজ ইতোমধ্যে ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে। এছাড়া সেতুতে বাতি বসানোর কাজও শেষ। এখন শুধু বিদ্যুৎ সংযোগ দিলেই আলোকিত হবে স্বপ্নের সেতু।

শেষ মুহূর্তে পদ্মাসেতুর কাজের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুর নিবা‍র্হী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের সারাবাংলাকে বলেন, ‘কিছু ছোটো-খাটো কাজ বাকি আছে। বলতে গেলে মূল কাজ শেষ। এখন সেতুতে রোড মার্কিং, আলোকিত করা এবং উদ্বোধনের কাজ বাকি। এছাড়া দুই পাশে দু’টি ম্যুরাল হবে। একটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের, অন্যটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সেগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে।’

উদ্বোধন কবে হবে এবং কী কী নির্দেশনা এখন পর্যন্ত পেয়েছেন?- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জুনের শেষ সপ্তাহে উদ্বোধনের কথা আমাদের বলা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট কোনো তারিখ জানানো হয়নি। কেননা আবহাওয়ার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। জুনের শেষ সপ্তাহে ঝড়-বৃষ্টির প্রকোপ বেশি থাকার কথা। সেই অনুযায়ী আমরা সবকিছুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। যদিও আমাদের প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি নেই। আর যেসব কাজ বাকি আছে সেগুলো আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে শেষ হয়ে যাবে আশা করছি।’

এদিকে সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, সেতুতে বাতি বসানোর কাজ শেষ। ল্যাম্পপোস্টে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার কাজও শেষের দিকে। এখন সেতুতে বিদ্যুতের মিটার বসানোর কাজ চলছে। বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ অফিসকে চিঠিও দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। যেখানে জুনের প্রথম সপ্তাহে সেতুতে বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া সেতুতে মার্কিং, সড়ক সংকেত এবং অন্যান্য যেসব কাজ বাকি ছিল সেগুলোর কাজও শুরু হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

 

জানা গেছে, দ্বিতল এই সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন আর নিচ দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। যদিও সেতুতে রেললাইনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। পদ্মাসেতু দিয়ে যানবাহন চালু হওয়ার পর লাইন বসানোর জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে সেতুটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আগামী জুলাইয়ে সেতু কতৃ‍র্পক্ষ রেল কর্তৃপক্ষকে সেতু বুঝিয়ে দেবে বলে জানা গেছে। আর সেতুর ওপর রেললাইন বসাতে ছয় মাসের মতো সময় লাগবে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মাসেতু। এরপর পর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মাসেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। যদিও দুই প্রান্তের উড়ালপথ (ভায়াডাক্ট) ৩ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার। সব মিলিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।

মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দু’টি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হয়েছে এ সেতুটি।

সারাবাংলা/এসজে/পিটিএম

পদ্মাসেতু

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর