Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেড়িবাঁধের কাজ শেষের আগেই সিসি ব্লকে ধস

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৩ মে ২০২২ ২০:৩০

বাগেরহাট : বাগেরহাটরে শরণখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মাণাধীন বেড়িবাঁধের কাজ শেষ হওয়ার আগেই বাঁধের সিসি ব্লক নদীতে ধসে পড়ছে। অপরদিকে, ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ৭/৮ কিলোমিটার বাঁধে কোনো সিসি ব্লক দেওয়া হয়নি। নদী শাসন না করায় সাড়ে তিনশত কোটি টাকার এই বাঁধ পানিতে ভেসে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এলাকাবাসী। তিন বছর মেয়াদি বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ছয় বছরে গড়িয়ে আসছে ৩০ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে বেড়িবাঁধে দেখা যায়, সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা, দক্ষিণ সাউথখালী, উত্তর সাউথখালী, বাবলাতলা, রায়েন্দা তাফালবাড়ী এবং রায়েন্দা ইউনিয়নের রাজেশ্বর পয়েন্টে বলেশ্বর নদীর তীরে নির্মিত বেড়িবাঁধের সিসি ব্লক খসে পড়েছে।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষিণ সাউথখালী (গাবতলা) ওয়ার্ডের মেম্বার জাকির হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘বলেশ্বর নদীর তীরে নির্মিত নতুন ওয়াপদা বেরীবাঁধের সিসি ব্লক ধসে নদীতে পড়ছে। মাঝে মাঝে বাঁধে ফাটল দেখা দেয় ঠিকাদারের লোকজন এসে কোনো রকমে ফাটল মাটি দিয়ে ঢেকে দিয়ে যায়। বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে মাটির বদলে বাঁধে বেশিরভাগ বালি ব্যবহার করা হয়েছে এবং নদী শাসন না করায় বাঁধে ফাটল দেখা দেয় বলে জানান এই জনপ্রতিনিধি।’

গাবতলী এলাকার সাবেক মেম্বার মোশারেফ হোসেন, গ্রামবাসী হাফেজ কাজী, খালেক হাওলাদার, আসাদ খান, আসাদুল খান ও তরিকুল ইসলামসহ অনেক গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, ‘বেড়িবাঁধ নির্মাণে ব্যাপক দুর্নীতি করায় বাঁধ টেকসই হয়নি। তা ছাড়া নদীশাসন না হওয়ায় শত শত কোটি টাকার বেড়িবাঁধ মানুষের কাজে আসবে না বলে তা বলেশ্বর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।’

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন জানান, গাবতলাসহ বাঁধের বিভিন্ন পয়েন্টে মাঝে মাঝে ফাটল ও দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। বলেশ্বর নদী শাসন ছাড়াই শত শত কোটি টাকা ব্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বেড়িবাঁধ ব্লকসহ নদীতে বিলীন হয়ে যাবে বলে চেয়ারম্যান আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

অপরদিকে শরণখোলার রায়েন্দাতাফালবাড়ী, মোরেলগঞ্জের কুমারখালী, সন্ন্যাসী ও আমতলী পয়েন্টের ৭/৮ কিলোমিটার জায়গা বেড়িবাঁধে কোনো সিসি ব্লক দেওয়া হয়নি ফলে ওই এলাকায়
বাঁধ ভাঙছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সাড়ে তিনশত কোটি টাকা ব্যয়ে শরণখোলা-মোরেলগঞ্জের ৩৫/১ পোল্ডারে ৬২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়। তিন বছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। চীনের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ করছে।

বাগেরহাট-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন শরণখোলার গাবতলাসহ উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করে বলেন, ‘যতদ্রুত সম্ভব বলেশ্বর নদী শাসন ও অপরিকল্পিত স্লুইসগেট সংস্কারসহ নতুন স্লুইসগেট করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের (সি ই আই পি) খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম মুঠোফোনে জানান, শরণখোলায় বেরিবাঁধের সিসি ব্লক ধসে যাওয়ার খবর তার জানা নেই বিষয়টি খোঁজ নিবেন প্রয়োজনে নতুন ব্লক বসাবেন। একবছর আগে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা বলেশ্বর নদীশাসন প্রকল্পের ফাইল অনুমোদন ও প্রয়োজনীয় অর্থ পেলে নদী শাসনের কাজ শুরু করা হবে এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ উচ্চপর্যায়ের তৎপরতা চালানো জরুরি। করোনাসহ নানা জটিলতায় তিন বছর মেয়াদী বেড়িবাঁধের কাজের মেয়াদ দুইদফা বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৩০ জুন বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ বলে ওই নির্বাহী প্রকৌশলী জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/একে

বাগেরহাট বেড়িবাঁধ শরণখোলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর