Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল লালকুঠি-রূপলাল হাউজ অংশে সরিয়ে নিতে আহ্বান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৩ মে ২০২২ ২২:৩৭

ঢাকা: ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে পুরান ঢাকার লালকুঠি থেকে রূপলাল হাউজ পর্যন্ত অংশের সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

সোমবার (২৩ মে) দুপুরে সদরঘাটের লালকুঠি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রজেক্ট (ডিসিএনইউপি) প্রকল্পের অধীন প্রকল্প সংক্রান্ত প্রদর্শনী কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।

মেয়র শেখ তাপস বলেন, বুড়িগঙ্গা নদী ঘেঁষে গড়ে উঠেছে আমাদের ঢাকা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা এই ঐতিহাসিক স্থাপনা থেকে এখন আর বুড়িগঙ্গা দেখতে পাই না। কারণ সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি দখলদারিত্বের ছোবলে নদী আজ দখল হয়ে গেছে। তাই আমি বিআইডব্লিউটিএ’কে অনুরোধ করব, অতি সত্বর আপনারা লালকুঠি থেকে রূপলাল হাউজ পর্যন্ত অংশে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সরিয়ে ফেলুন। ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে টার্মিনালের এই অংশটি দ্রুত সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিন।

মেয়র তাপস আরও বলেন, ঢাকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার বিষয়টি সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিতে আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর দুঃখজনকভাবে দেখলাম, লালকুঠি আর ঢাকা গেটই শুধু করপোরেশনের অধীন। রূপলাল হাউজসহ যেসব স্থাপনা ঢাকার অস্তিত্ব তৈরি করেছে, ঢাকাকে পরিচিতি দিয়েছে, সেগুলো করপোরেশনের অধীন নয়। তাই রূপলাল হাউজ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় হস্তান্তর করতে আজকের অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্টদের যে দাবি, সেই দাবির সঙ্গে আমিও একাত্মতা পোষণ করছি। রূপলাল হাউজ আমাদের হস্তান্তর করলে আমরা এর পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করব। আমরা ঢাকার সব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও স্মৃতিস্তম্ভের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মারসি মিয়াঙ টেমবন বলেন, লালকুঠি সংস্কারসহ ডিসিএনইউপি প্রকল্পের আওতায় যেসব কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে এবং তার যে প্রদর্শনী আজ আয়োজন করা হয়েছে, তাতে আমি সত্যি আনন্দিত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, রূপলাল হাউজ অবৈধ দখলের কবলে রয়েছে। আমি মেয়রকে বলব, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটি দখলদারমুক্ত করুন। ঢাকাবাসী চাইলে রূপলাল হাউজকে দখলদারমুক্ত করা সম্ভব। আমি মেয়রের প্রতি অনুরোধ রাখব, অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলুন। এসব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সিটি করপোরেশনের আওতায় নিয়ে আসুন। তাহলেই আমাদের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।

ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণের গুরুত্ব বর্ণনা করে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, চাইলেই ঐতিহাসিক স্থাপনা ভেঙে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ করা যায়, সাময়িকভাবে হয়তো লাভবানও হওয়া যায়। কিন্তু এতে ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করা যায় না। কিন্তু ঐতিহ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে আমার শহরে নিয়ে আসতে পারাটা যেমন মর্যাদার, তেমনি পর্যটক আকর্ষণের মাধ্যমে লাভবান হওয়াটা সম্মানেরও।

প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা এসময় হাতিরঝিল প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ঢাকা-১০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া টেকসই উন্নয়নের আঞ্চলিক পরিচালক জন রুম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বক্তব্য রাখেন।

করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর সিতওয়াত নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, প্যানেল মেয়র ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শহিদ উল্লাহসহ করপোরেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং আশপাশের ওয়ার্ডগুলোর কাউন্সিলররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআরসারাবাংলা/আরএফ/টিআর

ডিএসসিসি ডিএসসিসি মেয়র রূপলাল হাউজ শেখ ফজলে নূর তাপস সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর