পাহাড়ে হানাহানি মারামারি রক্তপাত আর চাই না: কাদের
২৪ মে ২০২২ ১২:৪৫
ঢাকা: পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমির জটিলতা ছাড়া পাহাড়ের সব উন্নয়নই প্রধান শেখ হাসিনা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ভূমি সমস্যার সমাধান হলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন।
মঙ্গলবার (২৪ মে) রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। রাঙ্গামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে সকাল ১০টার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, হানাহানি মারামারি রক্তপাত পাহাড়ে আর চাই না।
সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ধর্ম সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
দীর্ঘ এক দশক পর রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের সম্মেলনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইয়ে নেমেছেন চার ‘হেভিওয়েট’ প্রার্থী। এ তালিকায় রয়েছেন সভাপতি প্রার্থী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি দীপংকর তালকুদার এবং বর্তমান সহ-সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতব্বর এবং বর্তমান সহ-সভাপতি ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মো. কামাল উদ্দিন।
১৩ বছর আগের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বর্তমানের উন্নয়ন বাস্তবতা মিলিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে আর্থসামাজিক উন্নয়নে চেহারা পাল্টে গেছে। আমি নেত্রীর পক্ষ থেকে বলতে চাই, অক্ষরে অক্ষরে শেখ হাসিনার সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তির চুক্তির প্রতিটি ওয়াদা পূরণ করবেন।
তিনি বলেন, ‘কী নেই আজ রাঙ্গামাটিতে। ভূমি সমস্যার সমাধান হলেই সবসমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের ওপর আস্থা রাখুন।’
স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অনেক কষ্ট করে, অনেক রক্তের মধ্যে আপনারা এই পাহাড়ের আওয়ামী লীগ গড়ে তুলেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে। এখনো ঝুঁকি আছে। এখনো সংঘাতের রক্তপাত মাঝে মাঝে আমরা দেখতে পাই। এই রক্তপাত বন্ধ করতে হবে। পাহাড়ি বাঙালি আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং আমাদের পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।
আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সবাইকে অন্তঃকলহ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপন ঘরে যার শত্রু, তার শত্রুতা করার জন্য বাইরের শত্রুর দরকার নেই।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এবং করোনা সংকটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে বিশ্বে সংকটের কালো ছায়া। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা দুনিয়া আতঙ্কে-উদ্বেগে আছে। এই সংকটেও আমাদের নেত্রী অবিচল। পাহাড়ের মতো অবিচল।
তিনি বলেন, আল্লাহকে বিশ্বাস করি, আর কাউকে ভয় করি না। আমরা সৎপথে আছি, ন্যায়ের পথে আছি, সত্যের পথে আছি। আমরা এগিয়ে যাব। সংকট যতই ঘনীভূত হোক, সংকট হলেই তো আওয়ামী লীগ এগিয়ে যায়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল আজকে গণকের ভূমিকা নিয়েছেন। তার গণনায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দিন নাকি শেষ? ফখরুল সাহেব ক্ষমতা দেওয়ার মালিক স্রষ্টা, আল্লাহ। ক্ষমতার উৎস এদেশের জনগণ।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর ব্যয় নিয়ে মির্জা ফখরুল অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ছে।
পদ্মাসেতু জুনে উদ্বোধন হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মানুষ খুশি, সারাবাংলার মানুষ আনন্দে উল্লসিত। শুধুমাত্র ফখরুল এবং বিএনপির বুকে বড় ব্যাথা। তাদের বুকে বড় বিষজ্বালা। এই বিষজ্বালায় তারা আজকে দিশেহারা। মানুষের মুখে খুশির হাসি, বিএনপির মুখে শ্রাবণের কালো মেঘ।
সারাবাংলা/এনআর/এএম