ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে জাতীয় সরকার গঠন এবং সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ের জন্য বাম গণতান্ত্রিক জোট ছেড়েছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলন।
দুই দলের শীর্ষ নেতারা বলছেন, বাম জোটের অন্যান্য শরিকদের সঙ্গে মতানৈক্য চলছিল। এছাড়াও, আন্দোলনের কৌশলগত দিক নিয়ে প্রশ্ন ছিল তাদের।
তারা মনে করছেন, সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায় করতে বৃহত্তর ঐক্য এবং যুগপৎ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। বাম জোটের শরিক দলগুলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে প্রগতিশীল দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে চাইলেও দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় বাম জোট।
এই পর্যায়ে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি এই দুই দল বাম জোট ছেড়ে ৭ দলীয় জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিএনপির নেতৃত্বধীন জোটে যোগ দিয়ে দাবি আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থাকতে চায়। সঙ্গে বাম জোটকেও ৭ দলীয় জোটে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (২৪ মে) জোটের প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠকে সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনার পর বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং গণসংহতি আন্দোলন নেতাদের বলা হয়, যে কোনো একটি জোটে থাকতে হবে। দুই জোটে থাকার সুযোগ নেই। পরে জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকির বামজোটের সদস্য পদ স্থগিত রাখা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকি বৈঠকে জানান, ৭ দলীয় জোটের সঙ্গে তাদের বনিবনা না হলে যেন ফের বামজোটে ফিরতে পারেন, সে পদ খোলা রাখতে হবে। এরপরই তাদের সদস্যপদ স্থগিত রাখা হয়।
এ ব্যাপারে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক সারাবাংলাকে বলেন, তারাই বৈঠকে প্রস্তাব করেছেন যেন তাদের সদস্য পদ স্থগিত রাখা হয়।
তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে কৌশলগত পার্থক্য রয়েছে। জনগণের দাবি আদায়ের জন্য বৃহত্তর ঐক্য এবং আন্দোলনের বিকল্প নেই। বাম জোটের বন্ধুদের সঙ্গে রাজপথে দেখা হবে। ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সব বাম, গণতান্ত্রিক শক্তিকে বৃহত্তর আন্দোলন ও তার ভিত্তিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার তাগিদ থেকে চিন্তা ও কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অপর একটি সূত্র বলছে, আগামী সপ্তাহেই সাত দলীয় মঞ্চের আত্মপ্রকাশ ঘটতে পারে। সাত দলীয় মঞ্চের লক্ষ্য পরবর্তী সময়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা। এর জন্য তারা বিএনপিসহ অন্যান্য দলের সঙ্গেও আন্দোলনে যেতে পারে। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত এবং নির্বাচনকালীন তদারকি সরকারের দাবিতেই হবে তাদের আন্দোলন। আন্দোলন সংগ্রামের বিষয় নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৬ মে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সঙ্গে সংলাপে বসবেন। এরপরই জোনায়েদ সাকির সঙ্গে সংলাপ করবেন মির্জা ফখরুল।