Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যুক্তরাষ্ট্রে ৫ মাসে ২১২ বন্দুক হামলা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৬ মে ২০২২ ১৪:১৩

যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ কারণে চলতি বছরের মার্চে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের বিষয়ে দুইটি বিলও পাস করিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। চলতি বছরের পাঁচ মাসেই দেশটির বিভিন্ন স্কুলে ২৭টি বন্দুক হামলা হয়েছে।

ওয়াশিংটনের গান ভায়োলেন্স আর্কাইভ বলছে, গত পাঁচ মাসেই দেশটিতে ২১২টি বন্দুক হামলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, শুধু আগ্নেয়াস্ত্রের কারণেই দেশটিতে বছরে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারান। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন মারা যান প্রায় ১০০ জন। গবেষণা বলছে, আমেরিকায় জনসংখ্যার চেয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যা বেশি।

টেক্সাসের উভালডে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৪ মে) বন্দুকধারীদের গুলিতে ১৯ শিশু ও দুজন শিক্ষক নিহত হয়েছেন। চলতি বছর এমন দুর্ঘটনার শিকারের ক্ষেত্রে স্কুলটি ২৭তম। নিউইয়র্কের বাফেলো টপস সুপার মার্কেটে গুলি চালানোর মাত্র ১০ দিন পরেই এ ঘটনা ঘটল।

২০১৮ সাল থেকে স্কুলে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে ১১৯টি। গত সপ্তাহে মার্কিন রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ২০২০ সালে আগ্নেয়াস্ত্র হামলার শিকার হয়েছিলেন ১৯ হাজার ৩৫০ মার্কিনি। আগের বছরের তুলনায় এ সংখ্যা ছিল ৩৫ শতাংশ বেশি।

গবেষণা বলছে, ২০১৫ সালে দেশটিতে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৩৬১টি। অর্থাৎ ওই বছর প্রায় প্রতিদিনই যুক্তরাষ্ট্রের কোথাও না কোথাও বন্দুক হামলা হয়েছে। এতে নিহত হন ৩২৬ জন। আহত হন দেড় হাজারেরও বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা সংস্থার হিসাব বলছে, ১৯৭০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ২০১৮ সালে। ওই বছর দেশটির স্কুলে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে ৯৪টি।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, মার্কিন আগ্নেয়াস্ত্র নির্মাতারা ২০০০ সাল থেকে গত দুই দশক ধরে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১৪ কোটি বন্দুক তৈরি করেছে। দেশটি আমদানি করেছে আরও সাত কোটি ১০ লাখ বন্দুক। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চক্ষমতার অ্যাসল্ট রাইফেল, যা ৫০০ ডলারে পাওয়া যায়। ৯ মিলিমিটার পিস্তল যা নির্ভুল নিশানাসহ ব্যবহারে সহজ এবং স্বয়ংক্রিয় ট্রিগার পাওয়ার সমৃদ্ধ, এর দাম ২০০ ডলারেরও কম। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ২৭ থেকে ৩১ কোটি বন্দুকের সরবরাহ আছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা ৩২ কোটি। অর্থাৎ প্রায় প্রত্যেকেই একটি বন্দুক রাখতে পারেন।

গবেষণা সংস্থা পিস রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এক-তৃতীয়াংশ পরিবারে অন্তত এক জন বন্দুক বহন করেন। আগ্নেয়াস্ত্রের এই সহজলভ্যতাই দেশটিতে আগ্নেয়াস্ত্রের আতঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছে। একই কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের হামলার ঘটনা বাড়ছে। এ ধরনের হামলা মহামারিতে রূপ নিয়েছে দেশটিতে। নিরাপত্তার অজুহাতে নাগরিকদের হাতে থাকা বন্দুকই প্রতিনিয়ত কেড়ে নিচ্ছে শিশুসহ অসংখ্য নিরীহ মানুষের প্রাণ।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ৬০ ঘণ্টায় একটি করে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৭৪ বন্দুক হামলা হয়েছে। তাতে মারা গেছেন এক হাজার ৫৩৬ জন। ৯০০ জন আহত হয়েছেন।

অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে ২০১১-১৪ সাল পর্যন্ত প্রতি ৬৪ দিনে এক বার করে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর আগে, ২৯ বছর ধরে এর গড় ছিল ২০০ দিনে এক বার।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ১৯৯৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে ৯০টি। হামলাকারীর আগাম তথ্য ও হামলা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে তেমন সাফল্য না পাওয়ায় দেশটিতে প্রশ্নের মুখে এফবিআই, সিআইএ ও এনএসএর মতো শক্তিশালী গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থা। অনেক ক্ষেত্রে হামলার কারণও থাকছে অজানা।

সারাবাংলা/একেএম

বন্দুক হামলা যুক্তরাষ্ট্র

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর