কুসিক নির্বাচন: প্রতীক পেয়ে যা বললেন ৩ মেয়র প্রার্থী
২৭ মে ২০২২ ১৩:০০
ঢাকা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ১৫ জুন। নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন পাঁচজন প্রার্থী। ২৭ মে প্রতীক বরাদ্দ শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তারা জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রতীক বরাদ্দ শেষে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়েও জানান পরিকল্পনার কথা।
শুক্রবার (২৭ মে) সকাল ১০টায় কুমিল্লা নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে পাঁচ মেয়রপ্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
নৌকা প্রতীক পাওয়া আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত সারাবাংলাকে বলেন, নৌকা মার্কা স্বাধীনতার প্রতীক, বঙ্গবন্ধুর প্রতীক, উন্নয়নের কাণ্ডারি শেখ হাসিনার প্রতীক। এই প্রতীকের পক্ষেই কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নাগরিকদের অবস্থান। আর তাই আমি জয়ের বিষয়ে আশাবাদী।
তিনি বলেন, আজ (শুক্রবার, ২৭ মে) বিকেলে আমাদের মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে যেসব কমিটি আছে তারা প্রচারণা শুরু করবে। নৌকার প্রার্থী হিসেবে আমার অফিস আছে রাণীর দিঘিরপাড়। আগামীকাল সেখান থেকে আমরা প্রচারণার বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত জানাবো।
মাঠে প্রতিপক্ষ মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে না ভেবে পুরনো সব দিনের জঞ্জাল সরিয়ে কুমিল্লাকে আধুনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নির্বাচনে প্রচারণায় প্রাধান্য দেবেন বলেও জানান আরফানুল হক রিফাত।
এদিকে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা সদ্য সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু পেয়েছেন টেবিল ঘড়ি। প্রতীক বরাদ্দের পরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি সারাবাংলাকে বলেন, আমি যে প্রতীক চেয়েছি, তাই পেয়েছি। এই প্রতীক নিয়ে আমি ২০০৫ সালে পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জয়লাভ করেছিলাম। ২০১২ সালে আমি হাঁস মার্কা ও গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমি দলীয় প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছিলাম। তবে এবার প্রতীক হিসেবে হাঁস না থাকায় আমি টেবিল ঘড়িই চেয়েছিলাম। আর সেটিই পাওয়ার কারণে জয়ের বিষয়েও আশাবাদী।
তিনি বলেন, আমি দীর্ঘসময় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে চেষ্টা করেছি নাগরিকদের সমস্যা সমাধান করতে। শহরের বেশিরভাগ রাস্তাই এখন পাঁকা। আর তাই এবার প্রচারণাতেও সেটা গুরুত্ব পাবে। একইসঙ্গে যেসব কাজ আমি সমাপ্ত করতে পারিনি, সেগুলো পূরণ করার জন্য নাগরিকরা আমাকেই ভোট দেবেন বলে বিশ্বাস করি। প্রতীক বরাদ্দ শেষে আজ বিকেল থেকেই প্রচারণা শুরু করবেন বলে জানান মনিরুল হক সাক্কু।
স্বেচ্ছাসেবক দল থেকে পদত্যাগ করা অপর প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার পেয়েছেন ঘোড়া প্রতীক। নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, তরুণরা মিলেই গড়ে তুলবে আধুনিক কুমিল্লা সিটি করপোরেশন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের যে উন্নয়ন হওয়ার কথা তা থেকে অনেকাংশেই বঞ্চিত কুমিল্লাবাসী। শুধুমাত্র সরকার দলীয় কর্তাব্যক্তিদের ব্যর্থতা ও সাবেক মেয়রের অক্ষমতার কারণে এই বঞ্চনা। আর তাই আমি সেই ধারা ভাঙতে চাই।
তিনি বলেন, নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আমি আশাবাদী। কারণ কুমিল্লার মানুষ পরিবর্তন চায়। তাদের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করার জন্যেই আম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দ শেষে শুক্রবার (২৭ মে) বিকেল থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন নিজামুদ্দিন কায়সার। সদর দক্ষিণে থাকা ৯ টি ওয়ার্ড থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন বলে জানান তিনি।
এদিন প্রতীক হিসেবে ইসলামী আন্দোলনের রাশেদুল ইসলাম পেয়েছেন হাতপাখা। একইসঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান পেয়েছেন হরিণ। তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সেটা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৬ মে) আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ পারভেজ খান ইমরান সরে দাঁড়ানোয় কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন পাঁচজন।
তফসিল অনুযায়ী কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৫ জুন। এবার কুমিল্লা সিটির ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হবে। সিটিতে মোট ভোটার দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০। এর মধ্যে নারী ভোটার এক লাখ ১৭ হাজার ৯২, পুরুষ ভোটার এক লাখ ১২ হাজার ৮২৬।
এটি কুমিল্লা সিটির তৃতীয় নির্বাচন। এর আগে দুই নির্বাচনেই মেয়র পদে ভোটে নির্বাচিত হন মনিরুল হক সাক্কু। প্রথমবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবং দ্বিতীয়বার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।
সারাবাংলা/এসবি/এএম