রাশিয়ার আক্রমণ হতে ডনবাস অঞ্চল রক্ষায় প্রয়োজনীয় সবকিছু করার অঙ্গীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। একইসঙ্গে প্রবল রুশ আক্রমণের ফলে আত্মসমর্পণ না করে কৌশলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের পিছু হটার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দোনেস্ক এবং লুগানস্ক অঞ্চলে রাশিয়া সর্বাত্মক যুদ্ধ চালাচ্ছে। এই দুই এলাকা নিয়ে ডনবাসকে দেশের প্রধান শিল্পকেন্দ্রে পরিণত করেছে। এই এলাকাটিতে রুশ বাহিনী ‘গণহত্যার’ অভিযোগ করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘ডনবাসে সর্বোচ্চ গোলন্দাজ হামলা এবং সর্বোচ্চ রিজার্ভ সৈন্য মজুদ করেছে রাশিয়া। মিশাইল এবং বিমান থেকে শুরু করে সব ধরনের হামলা করছে রাশিয়া।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আছে, তা দিয়েই ভূমি রক্ষা করছি। এই সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সবকিছু করছি।’
এদিকে রাশিয়াপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা গতকাল শুক্রবার জানান, তারা সেভেরোডোনেটস্ক এবং ক্রামোটরস্ক শহরের মধ্যবর্তী লিমান শহর দখল করেছে। গুরুত্বপূর্ণ এই দুই শহরের সংযোগকারী প্রধান সড়ক এখনো কিয়েভের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
রুশ বাহিনী লুগানস্ক প্রদেশের সেভেরোডোনেটস্ক এবং লিসিচানস্কে প্রবেশ করেছে বলে পরস্পর বিরোধী রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে। আঞ্চলিক গভর্নর সের্গেই গেইডে দাবি করেছেন, রুশ বাহিনী দুই থেকে তিন দিনে গোটা অঞ্চল দখল করতে সক্ষম হবে না। তবে কিছু এলাকায় আত্মসমর্পণ ঠেকাতে সেখান থেকে ইউক্রেনের বাহিনী প্রত্যাহার করতে হতে পারে।
এক টেলিগ্রাম বার্তায় তিনি বলেন, ‘তারা (রুশ বাহিনী) সম্ভবত লুগানস্ক দখল করবে না। সেখানকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য কিয়েভ বাহিনীর যথেষ্ট শক্তি রয়েছে। হয়তো ঘেরাও এড়াতে আমাদের সৈন্যদের সরে আসার আদেশ দেওয়া হতে পারে।’
লুগানস্কের এক পুলিশ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তি জানায়, সেভেরোডোনেটস্ক ‘এখন অবরুদ্ধ’ এবং ইউক্রেনীয় সেনাদের বিলম্ব না করে শহর ত্যাগ করতে হবে।
তবে শহরের সিনিয়র এক কর্মকর্তা ওলেক্সান্ডার স্ট্রিউক এই দাবি অস্বীকার করেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, অবিরাম বোমাবর্ষণে পরিস্থিতি ‘খুবই ভয়াবহ।’
লিসিচানস্কের বিতরণ কেন্দ্রের প্রধান ওলেক্সান্ডার কোজির বলেন, ‘মানুষ খাদ্য ও পানি সংগ্রহের জন্য সব ধরনের ঝুঁকি নিতে ইচ্ছুক। তারা এতটাই মানসিকভাবে হতাশ ও বিপন্ন যে ভয়ভীতি উপেক্ষা করে খাবার খুঁজছে।’
সূত্র: বাসস