‘সরকারের সিন্ডিকেট দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করেছে’
২৮ মে ২০২২ ১৫:৪৪
ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের ভোটের অধিকার নেই এবং এই দেশের মানুষ আজকে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে কুপোকাত। সরকার পণ্যের দামের এই উর্ধ্বগতি থামাতে পারছে না। কেননা সরকারের পরিচালিত সিন্ডিকেটই মূল্য বৃদ্ধি করেছে। তাই সরকার এই দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত।
শনিবার (২৮ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে যুবদলের উদ্দ্যোগে খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকি এবং অব্যাহত আওয়ামী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগের, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা যেভাবে আক্রমণ করে রক্ত ঝাড়িয়েছে তার নিন্দা, ক্ষোভ ও ঘৃণা জানাই। একজন নেত্রীকে তারা যেভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে তার ভিডিও দেশ-বিদেশে ভাইরাল হয়েছে। এ ধরনের ঘৃণ্য কাজের জন্য নিন্দা জানাই। আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ জায়গার নির্দেশে তারা এসব অপকর্ম করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি স্মরণ করে দিতে চাই— যেসব নেতাদের নির্দেশে (ছাত্রলীগ/যুবলীগ) সংশ্লিষ্টরা নিউমার্কেটের ঘটনা ঘটিয়েছিল। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় পার পাইনি, তারাও কিন্তু গ্রেফতার হয়েছেন। বিশ্বজিৎকে যারা হত্যা করেছিল, নির্দেশদাতারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়ও তারা রেহাই পান নাই। অতএব আমি তাদের সংশোধন করে দিতে চাই, তোমরা ভালো ছাত্র না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারতে না। আজকে কাদের রক্ত ঢাকার মাটিতে ফেলছো? উপর মহলের কুপরামর্শে তোমাদের ভাইদের রক্ত নিচ্ছ? যদিও অতীতে তোমাদের নেতা ক্ষমতায় থাকার পরেই তাদের রেহাই হয়নি, তোমরাও পাবে না।’
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলাম। আমার অনেক কষ্ট হয়, আজকে সারাদেশে থেকে বেছে বেছে সোনার ছেলেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। গায়ের জোরের সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তোমাদের ব্যবহার করছে, দানবে পরিণত করছে। সেই নেতাদের প্ররোচনায় জীবন শেষ না করার জন্য তাদের হুঁশিয়ারি দিতে চাই। তারা জনগণের সমর্থন ছাড়াই শুধুমাত্র স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদী কায়দায় ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তোমাদের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। দেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের অধিকার নেই, ভোটের অধিকার নেই এবং এদেশের মানুষ আজকে দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতিতে কুপোকাত। সরকার এই উর্ধ্বগতি থামাতে পারছে না। কারণ, এই সরকারের পরিচালিত সিন্ডিকেটই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করেছে। তাই সরকারই এই দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত।’
এর আগে, গত ২০ এপ্রিল এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশের কিছু নেতা আছেন, যারা দুঃসময়ে মানুষের পাশে কতটুকু দাঁড়িয়েছে সেটা জানি না। করোনার সময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন কি না, সেটা দেখি নাই। কিন্তু এই সরকারকে হটাতে তারা খুব আন্দোলনে ব্যস্ত। আমার প্রশ্ন তাদের কাছে, আওয়ামী লীগ সরকার অপরাধটা কী করেছে?’
এর জবাবে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আপনি (শেখ হাসিনা) কি অপরাধ করেননি? মুক্তিযুদ্ধের যে আকাঙ্ক্ষা, সেই গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। ভোটার অধিকারকে হত্যা করেছেন। সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার জন্য ক্যাম্পে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন। এই দেশের মানুষের পকেটের টাকা লুট করার জন্য ইন্ডিয়ানদের দিয়ে বিদ্যুৎতের দাম বৃদ্ধি করেছেন। কি অন্যায় করেননি?’
তিনি আরও বলেন, ‘আজকে এই সরকারের দেশে-বিদেশে সমর্থন শূন্য হয়ে গেছে। শেখ হাসিনা সরকার একা হয়ে গেছেন। এই সরকার আজকে দুর্বল সরকার। সারাদেশের মানুষ এই সরকার থেকে মুক্তি পেতে চাই। এখন একটা ধাক্কা দেওয়ার বাকি। এই সরকারের ফয়সালা রাজপথে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে আপনাদের অনেক ধারণা রয়েছে। সেই ধারণা থেকে আজকে এই প্রতিবাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন। এই প্রতিবাদ অব্যাহত থাকুক। প্রতিবাদের খাতায় নাম লিখাইলে চলবে না। বাধা আসলে বাধা দিতে হবে। আক্রমণ আসলে পাল্টা আক্রমণ করতে হবে। পাল্টা আক্রমণের মধ্যে দিয়ে তাদের প্রতিহত করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি সুলতানা সালাউদ্দিন টুকু, যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নাসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/এআই/এনএস