Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পুরুষের তুলনায় নারীরা ৩ গুণ বেশি মজুরিবিহীন কাজ করে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৮ মে ২০২২ ১৬:১৮

ঢাকা: আগামী মাসেই জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হবে। তার আগে নারীর গৃহস্থালি কাজের অর্থমূল্য নিরূপণ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও জিডিপি’তে অন্তর্ভূক্ত করা, বাজেটে নারীর উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ক্ষমতায়নে বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটি।

শনিবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিআইপি লাউঞ্জে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির মতবিনিময় সভায় এই দাবি তুলে ধরা হয়।

বিজ্ঞাপন

সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সভাপতি শম্পা বসু লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গৃহস্থালি কাজ ছাড়া কোনো পরিবার ও সমাজ কল্পনা করা যায় না। আর গৃহস্থালি কাজের সিংহভাগই করে থাকেন পরিবারের নারী সদস্যরা। ঘরে সবার জন্য খাবার তৈরি, জামা-কাপড়, তৈজসপত্রসহ ঘরদোরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নত নিশ্চিত করা, শিশুদের লালন-পালন করা, স্কুলে আনা-নেওয়া, পড়ানো, বয়স্ক ও রোগীদের সেবা প্রদানসহ গৃহ ব্যবস্থাপনার প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ নারীরা করে থাকেন।’

গৃহস্থালি কাজ ছাড়া মানুষের শারীরিক, মানসিক, সাংস্কৃতিক জীবন বিকশিত হওয়া তো দূরের কথা টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু এ কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই, মর্যাদা নেই এমনকি এ কাজকে তাচ্ছিল্য করা হয় সবসময়। যে নারীরা নিজ গৃহে এই কাজগুলো করেন তাদের কোনো পারিশ্রমিক নেই।

বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার জরিপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মজুরীবিহীন কাজে পুরুষের চেয়ে নারীর অংশগ্রহণ দিনে ৬.৪৬ ঘণ্টা বেশি। ২০১২ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর টাইম ইউজড সার্ভে রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের কর্মজীবীদের মধ্যে ঘরের বিভিন্ন কাজে পুরুষ দৈনিক ১.৪ ঘণ্টা এবং নারী ব্যয় করেন ৩.৬ ঘন্টা অর্থাৎ মজুরিবিহীন কাজ নারী পুরুষের তুলনায় ৩ গুণ বেশি করে থাকে।’

বিজ্ঞাপন

শম্পা বসু বলেন, সারাবিশ্বে বর্তমানে নারীর মজুরিবিহীন গৃহস্থালি কাজের মূল্যায়ন শুরু হয়েছে। ভারত, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, নেপালসহ বেশ কিছু দেশ এ ক্ষেত্রে অনেকখানি এগিয়েছে। তারা হিসেব বিহীন নারীর শ্রমকে কীভাবে অর্থনৈতিক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে নারী ও পুরুষ উভয়েই মজুরিবিহীন কাজে নিয়োজিত থাকলেও এ কাজ সবচেয়ে বেশি করছেন নারীরা। এসব কাজ হিসাবে আনা হলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বাড়ত প্রায় ৪৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আমরা যখন আধুনিকতার কথা বলতে গিয়ে সবসময় ডিজিটালাইজেশনের কথা বলি তখন অর্থনৈতিক সব কিছুরই তো হিসেব করা সম্ভব। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ, নৈতিক অবস্থান, নারীর অধিকার ও সামাজিক মর্যাদার প্রশ্নে তো বটেই সামাজিক ন্যায্যতার কারণেও নারীর কাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দরকার।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ডা. মনীষা চক্রবর্তী, কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজসহ অন্যরা।

সারাবাংলা/এআই/একে

গৃহস্থালী নারী জিডিপি বাজেট মহিলা ফোরাম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর