Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে যাত্রা শুরু করল ‘বিআরসি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৮ মে ২০২২ ২৩:০১

ঢাকা: বাংলাদেশের প্রান্তিক ও বাদ-পড়া জনগোষ্ঠীদের কল্যাণ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করতে যাত্রা শুরু করল ব্রাত্যজন রিসোর্স সেন্টার (বিআরসি)। শনিবার (২৮ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ব্রাত্যজন রিসোর্স সেন্টারের যাত্রা শুরু অনুষ্ঠান এবং প্রকাশনা উৎসব আয়োজন করা হয়। এতে ১১টি বই ও মনোগ্রাফের প্রকাশনা করা হয়।

সোসাইটি ফর এনভায়নমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (সেড), পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান এই আয়োজন করে। তারা সবাই প্রান্তিক ও বাদ-পড়া, হতদরিদ্র, সীমাহীন সমস্যা ও দুর্ভোগে জর্জরিত, অদৃশ্য ও পিছনে পড়ে থাকা জনগোষ্ঠীসমূহ নিয়ে কাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

ব্র্যাকের চেয়ারম্যান শিক্ষা ও অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডীয় হাই কমিশনার ড. লিলি নিকোলস, ডেলিগেশন অব দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন টু বাংলাদেশের ডেপুটি হেড অব মিশন জেরেমি অপ্রিটেসক, দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক ও সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক মো. গোলাম রহমান এবং নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী এবং ওয়ান বিলিয়ন রাইজিংয়ের বাংলাদেশ সমন্বয়কারী খুশী কবীর।

এছাড়াও নিজ সম্প্রদায়ের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা তুলে ধরেন তথ্যের অভাবে তারা কতটা সমস্যার সম্মুখীন হন। যেকোনো নাগরিক সুবিধা পাওয়ার জন্য এসব তথ্য তাদের কাজে দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ব্রাত্যজন রিসোর্স সেন্টারের গবেষক সবাই। শুধু ডক্টরেটধারী হলেই তিনি গবেষক তা নয়, সব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের দেওয়া তথ্যেই সমৃদ্ধ হবে বিআরসি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে খুশি কবীর বলেন, ‘আদমশুমারিতে যেন সবাই জায়গা পান সেটি নিশ্চিত করতে হবে। লিঙ্গ, যৌন, জাতি, সম্প্রদায়ের পরিচিতি যেন স্পষ্ট হয়। তৃতীয় লিঙ্গ আপত্তিকর, অন্যান্য ঠিক আছে। তৃতীয় লিঙ্গ লিখলে প্রশ্ন আসে প্রথম এবং দ্বিতীয় লিঙ্গ তাহলে কে। এভাবে কারও প্রতি বৈষম্য না রেখে নতুন আদমশুমারিতে সবার তথ্য যেন ঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়।’

ড. গোলাম রহমান বলেন, ‘তথ্যের যে শক্তি, তা কাজে লাগিয়ে জীবনকে গতিশীল করতে হবে। বাংলাদেশ একটি ঘনবসতি দেশ। খেটে খাওয়া মানুষ এই দেশটাকে গড়ে তুলছেন। ঝরে পড়ার মতো অবস্থায় আছেন যারা তাদের সবাইকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে।’

ডেপুটি হেড অব মিশন, ডেলিগেশন অফ দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন টু বাংলাদেশ জেরেমি ওপ্রিটেস্কো বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন নীতিমালায় কাউকে পিছিয়ে না রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ উন্নয়ন করেছে। সেড এবং পিপিআরসির এই গবেষণাধর্মী প্রকাশনা ও উদ্যোগের ফলাফল বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। বিশ্বের সবজায়গায় জাতিগত, ধর্ম, যৌনতাসহ সব ধরণের বৈষম্যের বিরুদ্ধে কাজ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বাংলাদেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নানা কাজ হচ্ছে। আমরা তাদের সবার কাজের মূল্যায়ন করি। এবং আমরা এই সহযোগিতা করে যাবো। বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পূর্ণ অধিকার সংরক্ষণের জন্য আমরা সাহায্য বজায় রাখবো।’

প্রধান অতিথি ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘দেরিতে হলেও কিছু কিছু কাজ হয়। প্রকাশিত বইগুলো তথ্য সমৃদ্ধ প্রতিবেদন। যে সমস্ত তথ্য এখানে বাংলাদেশের অন্য যে জরিপ আছে, সরকার ও বিবিএসের পরিসংখ্যানে আপনাদের কীভাবে নেওয়া যায়, তা আরও নজর দেওয়া দরকার। উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য হল সবাই উন্নয়নের অংশীদার হবে। নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ থাকবে। তবে মূলধারায় যুক্ত হতে হবে।’

কানাডিয়ান হাইকমিশনার টু বাংলাদেশ ড. লিলি নিকোলস বলেন, ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠি তাদের জাতিগত পরিচয়ের জন্য যেসব সমস্যার মুখোমুখি হন তা আমার পক্ষে অনুভব করা সম্ভব না। তবে কানাডায়ও সম্প্রতি আদিবাসীদের কবর আবিষ্কৃত হয়েছে। তাই বলা যায় মার্জিনালাইজেশন সবজায়গাতেই হয়। বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠির অবস্থা উন্নয়নে আমরা এক সঙ্গে কাজ করতে চাই। আপনাদের এই কাজে আমাদের বন্ধু ভাবার আহ্বান জানাই।’

অনুষ্ঠানের শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে নিজেদের লেখা গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন চা শ্রমিক সম্প্রদায়ের সন্তানরা। জাদু প্রদর্শনের মাধ্যমে সবাইকে সম্পৃক্ত করার বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

এছাড়াও নিজ রচিত গীতি আলেখ্য পরিবেশন করেন ইভান আহমেদ কথা ও তার দল।

সারাবাংলা/আরএফ/এমও

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা প্রান্তিক জনগোষ্ঠি বিআরসি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর