ডা. সাবিরা হত্যা: ১ বছরেও উদ্ঘাটন হয়নি রহস্য
৩০ মে ২০২২ ১২:৪৩
ঢাকা: ২০২১ সালের ৩০ মে রাজধানীর কলাবাগান থেকে গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনার দুই দিন পরে সাবিরার ফুফাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। এরপর একবছর পেরিয়ে গেলেও এখনো উদ্ঘাটন হয়নি আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য। তবে শিগগিরই রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
বর্তমানে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য রয়েছে। সর্বশেষ গত ২৬ এপ্রিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওইদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই‘র পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এজন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শুভ্রা চক্রবর্তী আগামী ৭ জুন প্রতিবেদন দাখিলের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ৯ দফা প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা।
এ বিষয়ে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা জুয়েল মিঞা বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা বিষয়টি তদারকি করছেন। ইতোমধ্যেই আমরা তার স্বামীকে আটক করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। অনেক তথ্যও পাওয়া গেছে। কী কারণে ডা. সাবিরা খুন হয়েছেন, তার কারণ এখনো জানা যায়নি। আশা করছি, খুব শিগগিরই চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে পারব।
মামলার বাদী রেজাউল হাসান মজুমদার বলেন, সাবিরার স্বামীকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পিবিআই। তবে তার স্বামীকে আমরা সন্দেহ করিনি। পিবিআই বিভিন্ন কারণে তাকে রিমান্ডে নিয়েছে। পিবিআই সবকিছু দেখভাল করছে। সাবিরার মা ও ছেলে বিচারের আশায় রয়েছে। আমরা সবাই বিচারের অপেক্ষায় আছি।
অন্যদিকে সাবিরার স্বামী এ কে এম সামছুদ্দিন আজাদের আইনজীবী ইনসান আলী রাজো বলেন, আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। ঘটনার সঙ্গে জড়িত এমন কোনো তথ্য-উপাত্ত পাইনি। তারপরও পুলিশ তাকে আটক করে রিমান্ডে নিয়েছে। তাকে আটক রাখা হয়েছে। আমরা একাধিকবার তার জামিন চেয়েও পাইনি। আশা করছি, তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩০ মে রাজধানীর কলাবাগান প্রথম লেনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের শোবার ঘর থেকে চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান ওরফে লিপির রক্তাক্ত ও দগ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গলা কাটা, পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও পোড়া ছিল। ঘটনার একদিন পর ১ জুন কলাবাগান থানায় হত্যা মামলা হয়। এরপর গত ১৯ এপ্রিল ডা. সাবিরার স্বামী এ কে এম সামছুদ্দিন আজাদকে শান্তিনগর এলাকা থেকে আটক করে পিবিআই। তার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ২৪ এপ্রিল তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, সামছুদ্দিন আজাদ দুটি বিয়ের মধ্যে একটির কথা গোপন করে ডা. সাবিরাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্বামী বিদেশে থাকেন জানিয়ে সাবিরা কলাবাগানে বাসাভাড়া নেন। তাদের মধ্যে বিরোধ থাকার পরও সামছুদ্দিন আজাদ সাবিরার বাসায় যাতায়াত করতেন। সাবিরা খুনের পর বাসা থেকে তালাক নামাসহ বেশ কিছু ডকুমেন্ট পাওয়া যায়, যাতে ভিকটিমের প্রতি আসামির চরম ক্ষোভ থাকার বিষয়টি প্রতীয়মান হয়। এছাড়া সাবিরা খুন হওয়ার আগে তাদের দীর্ঘসময় মেসেঞ্জারে কথা হয়। সেখানে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। তবে তালাকের বিষয়টি অস্বীকার করেন সামছুদ্দিন।
সারাবাংলা/এআই/এএম