Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২০৩০ সালের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলারের চামড়া রফতানি সম্ভব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ মে ২০২২ ২০:৫৬

ফাইল ছবি

ঢাকা: চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় সম্ভব। সেজন্য এ খাতের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে শিল্প মন্ত্রণালয়, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং শ্রম মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। একইসঙ্গে চামড়া খাত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গড়ে তুলতে হবে বলেও মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

মঙ্গলবার (৩১মে) দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন, অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ ও গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্ট্রিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক ওয়েবিনারের বক্তারা এমন মতামত দিয়েছেন। ‘ট্যানারি শিল্পে করোনার প্রভাব মূল্যায়ন’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব জাকিয়া সুলতানা। ইআরএফ সভাপতি সভাপতি শারমিন রিনভী সভাপতিত্বে এতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ।

বিজ্ঞাপন

শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘চামড়া খাত অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। ঠিকমতো পরিচর্যা ও মনিটরিংয়ের মাধ্যমে মান নিশ্চিত করতে পারলে এ খাত থেকে ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন রফতানি আয় সম্ভব। কিন্তু এ খাতে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। ইউরোপীয়ান, ইটালিয়ান ও ভারতীয় কোম্পানি আসছে। কিন্তু কারও কাছ থেকে সমাধানের ভালো প্রকল্প পাওয়া যাচ্ছে না। চামড়ার সঠিক দাম নিশ্চিত করাও চ্যালেঞ্জ। কোরবানির সময় চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা সে দাম পান না।’

বিজ্ঞাপন

সাভারের সিইটিপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আগের ইটিপি আর এখনকার ইটিপি আলাদা। ইটিপির ১০৯টি নজেলের কেমিক্যাল নিশ্চিত করা হয়েছে। একটি মডিউল পরিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। আগের তুলনায় ইটিপির কমপ্লায়েন্স অনেক ভালো। আগামীতে আরও ভালো হবে। রাজশাহীতে চামড়া খাতের জন্য সিইটিপি প্ল্যান্ট বসানোর পরিকল্পনার রয়েছে।’

অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে সারাবিশ্বে সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এ রকম সময়ে চামড়া পণ্যের বাজারে নিজেদের অংশ বাড়ানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু নিজস্ব কাঁচামাল থাকা সত্ত্বেও কমপ্লায়েন্সের অভাবে সে সুযোগ কাজে লাগানো যাচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে কাঁচা চামড়ার রফতানি কমেছে ৭৯ শতাংশ। আর ফিনিশড চামড়ার রফতানি বেড়েছে ৮০ ভাগ। এর অর্থ হচ্ছে বাংলাদেশ নিজেদের চামড়া ব্যবহার করতে পারছে না। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে এ খাতে যেসব নীতিমালা নেওয়া হয়েছে সেগুলো ঠিকমত বাস্তবায়ন হয়নি।’

হাজারীবাগ থেকে রেড জোনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, ‘একা শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষে চামড়া খাত এগিয়ে নেওয়া সম্ভব না। শ্রম ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে সমন্বিত পদক্ষেপ দরকার।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ গবেষণার ফলাফল মূল প্রবন্ধ আকারে উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও বাংলাদেশ সামষ্টিক অর্থনীতিতে ইতিবাচকভাবে এগোচ্ছে। কিন্তু এখন শুধু প্রবৃদ্ধি বা মাথাপিছু আয় নয়- এর পেছনের পরিস্থিতিগুলোর উন্নতি দরকার। করোনার সময়ে সরকার যে প্রণোদনা দিয়েছে সেটি কাজে লেগেছে।’

তিনি বলেন, ‘চামড়া খাতে ভালো না করার একমাত্র কারণ হচ্ছে কমপ্লায়েন্সের অভাব। পরিবেশগত, সামাজিক ও মানের দিকে জোর দিতে হবে। কমপ্লায়েন্স না হওয়ার কারণে বাংলাদেশ পণ্যমূল্য ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম পাচ্ছে।’

তিনি আর বলেন, ‘করোনার প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে এই খাত আশানুরূপ সুবিধা পায়নি। চামড়া খাতে ৮ হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ঋণ আছে। এই ঋণের বিপরীতে বছরে ৮০০ কোটি টাকা সুদ দিতে হয়। অনেক কারখানাই সময়মত ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে পারেনি। ফলে ওইসব কারখানা প্রণোদনা সুবিধা পায়নি। একটা ম্যাপিং করে এগোনো গেলে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় করা সম্ভব। তবে এজন্য কর্মপরিকল্পনা যথাযথভাবে সময়মত বাস্তবায়ন করতে হবে।’

বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক এ কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘চামড়া খাতের শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় শ্রম আইন বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য এ খাতকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা উচিত। সামষ্টিকভাবে কর্মী ব্যবস্থাপনা ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। এটা দূর করার উদ্যোগ দরকার।’

সারাবাংলা/জিএস/এনএস

চামড়া রফতানি টপ নিউজ দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন শিল্প মন্ত্রণালয়

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর