মে মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৩৮ ঘটনায় ৪ মৃত্যু
৩১ মে ২০২২ ২১:২৭
ঢাকা: মে মাসে সারাদেশে ৩৮টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় চার জন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও ১৬ জন। এছাড়াও আহত হয়েছেন ৫৬৯ জন নারী ও পুরুষ ও শিশু।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) মে মাসের মানবাধিকার পরিস্থিতি মনিটরিং প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) গণমাধ্যমে ওই প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে মে মাসের রাজনৈতিক সহিংসতায় হতাহত ও রাজনৈতিক কর্মীদের আটক-গ্রেফতারের চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি অন্যান্য মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও এমএসএফ সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এমএসএফের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সহিংসতা ও সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনাস্থল থেকে ৪২ নারী ও পুরুষ রাজনৈতিককর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ৩৯ জন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতাকর্মী বলে পরিচয় পাওয়া গেছে। বাকি তিন জনের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক সহিংসতার তথ্য তুলে ধরে এমএসএফ জানিয়েছে, গত ২ মে কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া ইউনিয়নের আস্থানগর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে চার জন নিহত হন। ১৩ মে ও ২২ মে মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের দুই দফা সংঘর্ষ চলাকালে ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। অন্যদিকে ২৩ মে পটুয়াখালী জেলা শহরে ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের মিছিলে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় ইটের আঘাতে মেহেরীন আফরোজ নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৪ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় ছাত্রদলের কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ হামলা করে। হামলায় ছাত্রদলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। অন্যদিকে ২৬ মে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ফের ধাওয়া ও পাল্টা-ধাওয়ার সময় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এদিন খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া যায়।
একই দিন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বগুড়ার মহিলা দলের নেতার আপত্তিকর বক্তব্যের জের ধরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা দফায় দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বগুড়ার গাবতলীতে চলা এ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন চার জন। এ সময় পুলিশ মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শটগানের কয়েকটি গুলি ছোঁড়ে ও লাঠিপেটা করে।
এমএসএফ মনে করছে, রাজনৈতিক অঙ্গনে সরকার দলীয় ও বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে রাজপথের কর্মসূচি নতুনভাবে প্রকাশ পাওয়ায় নাগরিক জীবনে নতুন মাত্রায় উৎকণ্ঠা, সহিংসতা, হানাহানি ও হতাহতের ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের নিজেদের মধ্যকার সংঘাত-সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিকার। ফলে হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এসব কারণে সুষ্ঠু রাজনীতি করার অধিকার থেকে জনগণ বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি ক্রমাগত রাজনীতির ওপর থেকে জনগণ আস্থা হারাচ্ছে।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর
এমএসএফ মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন রাজনৈতিক সহিংসতা সহিংসতায় মৃত্যু