Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে মে মাসে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩১ মে ২০২২ ২২:১২

ছবি: প্রতিকী

ঢাকা: এপ্রিল মাসের তুলনায় মে মাসে কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে। এপ্রিল মাসে সারাদেশে কারা হেফাজতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন পাঁচ জন। সেখানে মে মাসে আট জন মারা গেছেন কারা হেফাজতে। তাদের মধ্যে তিন জন ছিলেন কয়েদি, বাকি পাঁচ হাজতির মধ্যে এক জন নারী।

মঙ্গলবার (৩১ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এমএসএফের মে মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে কারা পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত ৩ মে বিকেলে মাদারীপুর কারাগারের ভেতরেই মারা যান সুধির পাল। চার মাসের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি সুধিরের হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় বলে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে। একই দিন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের হাজতি আজাহার আলী (৬৭)। ৭ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারা হেফাজতে মারা যান এক বছরের সাজাপ্রাপ্ত মেজবাহ উদ্দিন (৫৬)।

৮ মে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কিশোরগঞ্জ কারাগারের হাজতি মো. শামীম (৩৫)। ১১ মে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের হাজতি এম এম রাকিবুল আজাদ ইমরানকে (২৭) মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ১৩ মে অসুস্থ হয়ে পড়লে নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান হাজতি সুমন মিয়া (২৩)।

এছাড়া ২০ মে অচেতন অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর জেলা কারাগারের কয়েদি নুরুল ইসলামকে (৩৮) মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ২১ মে বিকেলে অসুস্থ হয়ে পড়লে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের হাজতি শাহানাজ বেগমকে (৫৯) গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

এমএসএফ বলছে, কারাগারে অপর্যাপ্ত চিকিৎসার কারণে কোনো বন্দি কারা অভ্যন্তরে অসুস্থ হলে কারাগারের বাইরে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই অধিকাংশ বন্দির মৃত্যু হয়। কারাগারের ভেতরে চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি হেফাজতে মৃত্যুর সঠিকভাবে তদন্ত করা উচিত।

কারা হেফাজতে মৃত্যু ছাড়াও মে মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণের একটি ঘটনা ঘটেছে। ২৫ এপ্রিল হাজারীবাগের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ১২ দিন পর মোহাম্মদপুরের র‍্যাব-২ অফিস থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় এশাক হোসেন লিংকনকে। এমএসএফের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি (সিআরপিসি) অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে কাউকে আটকে রাখা বেআইনি। এই সময়সীমা অতিক্রম করলে আটক ব্যক্তিকে অবশ্যই আদালতে হাজির করতে হবে, যা এশাক হোসেন লিংকনের ক্ষেত্রে ঘটেনি।

মে মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে একজনের এবং গ্রেফতারের সময় পুলিশের ধাওয়ায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এমএসএফের প্রতিবেদনে। দ্বিতীয় ঘটনায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পানিতে ঝাঁপ দিলে মারা যান ওই দু’জন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পুলিশের কাছে এক কিশোরীর ধর্ষণের শিকার হওয়া, চায়ের দোকানির কাছ থেকে পুলিশ কর্মকর্তার মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া ও হাসপাতালের ভেতরে রোগীর তিন স্বজনের আনসার বাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এমএসএফ মনে করছে, প্রথম দু’টি ঘটনায় পুলিশের অমানবিক আচরণ দৃশ্যমান। এ ধরনের ঘটনাগুলো গুরুতর অপরাধ, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এরকম কর্মকাণ্ড আইন বহির্ভূত ও চরম উদ্বেগের বিষয়, যা নাগরিক জীবনে চরম উৎকণ্ঠা তৈরি করছে। এসব ঘটনা ক্রমাগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থাহীনতার জন্ম দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

এমএসএফ কারা হেফাজতে মৃত্যু টপ নিউজ মানবাধিকার প্রতিবেদন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সিটিকে রুখে দিল নিউক্যাসেল
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:০৮

সম্পর্কিত খবর