‘অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি কারণে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে’
২ জুন ২০২২ ১৭:৪৯
ঢাকা: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, বর্তমান সরকারের উদ্যোগে অভয়াশ্রম তৈরি ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি কারণে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। একটা সময় ইলিশ একেবারে বিলুপ্ত হওয়ার মতো অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। সবার সহযোগিতায় এখন ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। অবৈধ মৎস্য আহরণ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেসব নদীতে স্বাভাবিকভাবে ইলিশ আসার কথা নয় সেখানেও এখন ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে মৎস্য অধিদফর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের কেন্দ্রীয় অবহিতকরণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মৎস্য অধিদফতর এ কর্মশালার আয়োজন করে।
মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েৎ হুসেন, নৌপুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. শফিকুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য ও প্রকল্প বিষয়ে উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক জিয়া হায়দার চৌধুরী।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে ইলিশের সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয় আমাদের দেশে। ইলিশের ভৌগোলিক নির্দেশক সনদ আমরা পেয়েছি। সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ইলিশ আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। সেটা ধরে রাখার জন্য সকলের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বেপরোয়া বালি উত্তোলন, নদীর গতি প্রকৃতি পরিবর্তন অথবা পানিতে তৈলাক্ত ও বিষাক্ত সামগ্রী ছাড়ার কারণে ইলিশের পরিবেশ নষ্ট হয়। ইলিশ স্পর্শকাতর মাছ। উপযোগী পরিবেশ না পেলে গভীর সমুদ্র থেকে নদীতে এসে আবার সমুদ্রে ফিরে যায়। এ জন্য ইলিশের অভয়াশ্রম সৃষ্টি করা ছাড়া ইলিশ ধরে রাখা যাবে না।’
ইলিশ সুরক্ষায় সম্পৃক্তদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘ইলিশ সুরক্ষায় শৈথিল্যের সুযোগ নেই। যদি মনে করা হয়, ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে এখন আর কিছু করার দরকার নেই, তাহলে আবার একটি বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। বাঙালির কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বড় অংশ বাংলাদেশের ইংলিশ। ইলিশ রক্ষা রাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। আমরা চাই জাটকা নয়, বড় আকারের ইলিশ মৎস্যজীবীরা আহরণ করবেন। এ জায়গায় সবাই মিলে সহযোগিতা করতে হবে।’
শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘ইলিশের স্বাদ, রং, গন্ধ, প্রাকৃতিক বিচরণক্ষেত্র এসব নিয়ে আমাদের গবেষকরা প্রচুর গবেষণা করছেন। গবেষণা থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। আমরা ইলিশকে পুরাতন যুগের ইলিশের জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। ইলিশ হবে সমৃদ্ধ ও সুস্বাদু। এর সুগন্ধ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দফতর-সংস্থা ও বিজ্ঞানীরা কাজ করছে। তারা কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় প্রতিকূলতার মুখোমুখি হচ্ছেন। যতই প্রতিকূল পরিবেশ আসুক সেটা মোকাবিলা করতে হবে।’
কর্মশালা জানানো হয়, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ৩০ হাজার ইলিশ আহরণকারী জেলে পরিবারকে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উপকরণ সহায়তা দেওয়া হবে। এ প্রকল্প ইলিশের স্থায়িত্বশীল উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি জাটকা ও ইলিশ জেলেদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে অবদান রাখবে। প্রকল্প সমাপ্তির পর ইলিশের উৎপাদন ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং পদ্মা নদীসহ অন্যান্য নদীতে ইলিশের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পাবে।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম