‘যৌন ক্ষমতা হারিয়ে’ বাবাকে খুন করে ছেলে, ৪ বছর পর রহস্য উদঘাটন
২ জুন ২০২২ ১৮:৪২
লালমনিরহাট: কালীগঞ্জ উপজেলায় বাবার কবিরাজি চিকিৎসার কারণে যৌন ক্ষমতা হারিয়েছেন, এমন ক্ষোভ থেকেই নিজের বাবাকে খুন করেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দীর্ঘ ৪ বছরের তদন্ত শেষে ‘ক্লু লেস’ এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে খুনিকে গ্রেফতার করেছে লালমনিরহাট সিআইডি।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুরে লালমনিরহাট পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় জেলা সিআইডির সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা (সিআইডির) অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইসমাইল বলেন, ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই কালীগঞ্জ উপজেলার নিথক অচিনতলা এলাকায় গভীর রাতে নিজ ঘরে খুন হন গোলাম হোসেন (৪০)। তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায়, কাঁধে, ঘাড়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। নিহতের বড় ছেলের দায়ের করা মামলায় তদন্ত কাজ শুরু করলেও কোনো রহস্য খুঁজে পাওয়া যায় না।
দীর্ঘ চার বছরে ৬ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি। চলতি বছরের মার্চে ৭ম তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেন সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জায়েদুল ইসলাম জাহিদ। দায়িত্ব নিয়ে এই মামলার সন্দিগ্ধ আসামি গোলাম হোসেনের দ্বিতীয় ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে গত ১০ এপ্রিল আটক করে আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করলে জিজ্ঞাসাবাদে তার পিতাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন সে।
জাহাঙ্গীরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তার বাবা ২০০৯ সালের দিকে কবিরাজি চিকিৎসায় তার যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে দেন। পরের বছর বিয়ে করলে বাসর ঘরে তিনি বুঝতে পারেন তার যৌন ক্ষমতা নেই। দীর্ঘ আট বছরের সংসার জীবনে অক্ষমতা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে কলহ, বিরোধ লেগে থাকলে বাবার প্রতি ক্ষোভ তৈরি হতে থাকে। একপর্যায়ে তাকে হত্যা করলে যৌন ক্ষমতা ফিরে পাবেন মনে করে পরিকল্পনা করেন। ঘটনার দিন স্ত্রী ঢাকায় গার্মেন্টসে থাকার সুযোগে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি।
এ বিষয়ে খুনি আদালতে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
সিআইডির এ সংবাদ সম্মেলনে লালমনিরহাট সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার ইসমাইল সিআইডি ইন্সপেক্টর মো. আজিমুদ্দিন, সাব-ইন্সপেক্টর জাহিদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এমও