‘মনোবল অটুট থাকলে বিনা যুদ্ধেই জয় লাভ করা যাবে’
৪ জুন ২০২২ ১৭:৫০
ঢাকা: জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক শক্তির সাহস, আস্থা ও মনোবল অটুল থাকলে বিনা যুদ্ধেই সরকারের বিরুদ্ধে জয় লাভ করা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শনিবার (৪ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে দেশের গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল ও শক্তিগুলো অঙ্গীকার করেছে। এই অঙ্গীকার এবং জাতীয়তাবাদী শক্তির ওপর আস্থা, বিশ্বাস এবং মনোবল ঠিক রাখা গেলে সরকারের বিরুদ্ধে বিনা যুদ্ধেই আমরা জয়লাভ করতে পারব।’
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর সকাল বেলাও ‘সৈনিকরা’ জানতো না একটু পরে পাকিস্তান আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছে। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা জানতো না এরশাদকে পদত্যাগ করতে হবে। আজ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিচের দিকের নেতাকর্মীদের আষ্ফালন দেখে মনে হচ্ছে, তারাও জানেন না তাদের নেত্রী কখন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতো আত্মসমার্পন করবেন, এরশাদের মতো পদত্যাগ করবেন। এই অবুঝ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বলি- রাস্তায় নেমে আমাদের ওপর আক্রমণ, অথবা মারামারি ও গোলাগুলি করার আগে আপনার নেত্রীর কাছে গিয়ে কানে কানে জিজ্ঞাস করেন, তিনি কখন আত্মসমার্পন করবেন?
‘তারিখটা খুব কাছাকাছি। ১৩ বছর যেহেতু আমরা অপেক্ষা করছি, কয়েকটা দিন বা মাস এটা তো অনেক দিন না’- বলেন বিএনপির শীর্ষ নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য বড় শক্তি অর্থনৈতিক ম্যানেজমেন্ট। এরই মধ্যে ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সাড়ে ছয়’শ কোটি টাকা নেই, শেয়ার মার্কেট থেকে প্রায় ৯০ লাখ কোটি টাকা নাই। এভাবে অর্থনৈতিক অবস্থা শূন্য হয়ে গেছে। আগে তো তলাবিহীন ঝুঁড়ি ছিল, এখন হয়তো দেখা যাবে তলা আছে ঝুঁড়ি-ই নেই। সুতরাং এই অবস্থার মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনা করা খুব কষ্টের।’
গয়েশ্বর বলেন, ‘অর্থনীতির স্বাভাবিক একটা সূচক আছে। আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ৪ অথবা ৫ মাসের রিজার্ভ থাকলে তা ইতিবাচক বলা যায়। কিন্তু তা নেই। যদি থাকতো তাহলে ব্যবসায়ীদের এলসি খুলতে ৭০ শতাংশ মার্জিন দিতে হতো না। আবার ব্যাংকের যে ডলারের মূল্য, তারসঙ্গে বাইরের যে মূল্য ছিল দুই/তিন টাকা কমবেশি। কিন্তু এখন ব্যাংকের চেয়ে বাইরে ১২ টাকা কমবেশি। এই অবস্থায় বাইরে থেকে ডলার কিনে ৭০ শতাংশ মার্জিন দিয়ে এলসি খোলা হয়। এতে স্বাভাবিকভাবে পণ্যের দাম ২০ শতাংশ বেড়ে যায়। সে কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং শ্রমিক ছাটাই। নতুন কোনো উৎপাদন ক্ষেত্র বা শিল্প কলকারখানা হচ্ছে না। অর্থনৈতিকভাবে এই সরকার দেউলিয়া অনেকটা।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা ধার করে উন্নয়নের নামে যার সিংহগভাগ পাচার করা হয়েছে, সেই ধারের টাকার সুদ দিতে হবে দুই বছর পরে। এই সুদের টাকা সরকারের পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব হবে না। এ কারণে জিনিসপত্রের দাম কমানো যাবে না। মানুষের হাহাকার এবং অভাব-অনটন দেখা দিয়েছে। এটা তীব্র থেকে তীব্র হবে।’
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, হুমায়ুন কবির খান প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম