Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৫ জুন ২০২২ ১১:৫৩

চট্টগ্রাম: সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। রোববার (৫ জুন) সকাল ১০টার দিকে সেনাবাহিনীর দেড় থেকে দুই শতাধিক সদস্যের একটি দল আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন। অন্যদিকে এই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর ১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরা সুলতানা সাংবাদিকদের জানান, কন্টেইনার ডিপোটিতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রয়েছে। যে কারণে আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর কেমিক্যাল বিশেষজ্ঞরা ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে ৯ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করার কথা জানিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন বলেছেন, কমিটিকে চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হবে।

ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার (৪ জুন) আনুমানিক রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরী থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর এলাকায় অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুন লাগে। প্রথমে কুমিরা ও সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও শ্রমিকসহ ৪ শতাধিক মানুষ দগ্ধ ও আহত হন।

জানা গেছে, শুরুতে ডিপোর কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এরপর স্থানীয় কুমিরা স্টেশনের দুটি ইউনিটের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু পরে রাসায়নিকের একটি কন্টেইনারে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে পর পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেন।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের আগ্রাবাদ স্টেশন থেকে সব গাড়ি রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়। রাত বাড়ার সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরীর সব স্টেশনের সব গাড়িই সেই ডিপোতে আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত হয়। এরপরও আগুন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হলে ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লা থেকে অগ্নি নির্বাচক গাড়ি পাঠাতে অনুরোধ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার পরপরই হতাহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুইজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত। এর ঘণ্টাখানেক পরে আরও দুজনের মৃত্যুর খবর দেন মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নুরুল আলম। তিনি বলেন, আহত ৬০ থেকে ৭০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রায় ২০ জনের অবস্থা গুরুতর।

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, কেমিকেলের কন্টেইনারে আগুন লাগার পর পানি দিলে তা আরও বেড়ে যায়। এতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আগুন নেভাতে গেলে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের একজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

বিএম কন্টেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ আগুন লাগার কারণ সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি। ডিপোর কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা জানান, রাতের পালায় তাদের নিজস্ব দুই শতাধিক কর্মী ডিপোতে কাজ করেন। এরসঙ্গে আরও যুক্ত থাকেন কয়েকশ ট্রাক ও কভার্ডভ্যানের চালক, সহকারী ও শ্রমিকরা। প্রায় ২৪ একর জমির উপর ওই ডিপোটি অবস্থিত। সেখানে কয়েক হাজার কন্টেইনার ছিল। তবে এ সংখ্যা আসলে কত তা নির্দিষ্ট করে কেউই জানাতে পারেনি।

সারাবাংলা/এএম

অগ্নিকাণ্ড চট্টগ্রাম বিএম কনটেইনার সীতাকুণ্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর