৭৫’র পুনরাবৃত্তির চিন্তা মাথায় আনলে প্রতিহত করা হবে: শেখ পরশ
৫ জুন ২০২২ ১৯:৩৪
ঢাকা: যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, বিএনপি এতোদিন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করেছে, আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিবেন, আর আমরা কি বসে থাকব? শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিবেন আমাদের সামনে, শেখ ফজলুল হক মণি’র যুবলীগ এখনও বেঁচে আছে। আমরা রাজপথ থেকে জন্মেছি, রাজপথেই আছি, রাজপথেই মরতে জানি। সুতরাং, আন্দোলনের নামে আগুন-সন্ত্রাস করলে জবাব রাজপথেই দেওয়া হবে জানিয়ে দিলাম। আমরা সব সময় প্রস্তুত আছি আপনাদের মত অপশক্তিকে শায়েস্তা করার জন্য। বাংলাদেশে আর কোনো ৭৫’র পুনরাবৃত্তিতো দূরের কথা, ওই চিন্তা মাথায় আনলে মাথা ভেঙে দেওয়া হবে। আমরা হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি।
রোববার (৫ জুন) সকাল ১১টায় রাজধানীর ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। বিক্ষোভ সমাবেশ সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বিএনপির উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের উচিত ছিল জিয়াউর রহমানের খুনের বিচার চাওয়া, তা না চেয়ে আপনারা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নারী ও শিশু হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি চাচ্ছেন। এ কেমন মানসিকতা? এ কেমন চরিত্র আপনাদের? খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়া কোনোদিন জিয়াউর রহমানের হত্যার বিচার চায় নাই। জিয়াউর রহমানের লাশ এবং সমাধি নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক আছে। এই সকল সন্দেহ একদিন পরিষ্কার হবে। তখন এদেশের মানুষ বুঝবে যে বিএনপি কিভাবে এদেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তখন তাদের গাঁট-বস্তা নিয়ে পালানো ছাড়া উপায় থাকবে না। আসলে সেই দিন বেশি দূরে নাই। এটা ডিজিটাল বাংলাদেশের যুগ। সবকিছুই বেড়িয়ে আসবে, সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমরা আপনাদের ধরি না বলে, আমরা সুযোগ দিচ্ছি তাই আপনারা মাঠে রাজনীতি করতে পারছেন। অন্যথায় কবে আপনাদের বোল্ড আউট করে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠাতে পারি।
তিনি আরও বলেন, আজ বিএনপি অন্যান্য অপশক্তিকে নিয়ে দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ স্লোগানের মাধ্যমে বিএনপি আসলে অসাংবিধানিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছে। তারা হানাহানির রাজনীতির পথে হাঁটতে চাইছে। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা লাশ চায়, লাশের রাজনীতি করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। কিন্তু যতই ষড়যন্ত্র করুক কোনো লাভ হবে না, নির্বাচনকে প্রতিহত করার ক্ষমতা তাদের নাই। পদ্মা সেতু নিয়ে যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, শেখ হাসিনা সে ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে আগামী ২৫ তারিখ স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন ইনশাআল্লাহ। আসলে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু হওয়ার পর খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। পদ্মা সেতু হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপিকে নিয়ে বিভিন্ন হাসি-তামাশা হচ্ছে। অপরদিকে পদ্মা সেতু নির্মাণে মানুষের উচ্ছ্বাস ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত। এসব মিলিয়ে বিএনপির আর সহ্য হচ্ছে না।
তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সংঘবদ্ধ থাকবেন। ওদের দিন শেষ। খুব শিগগিরই ওদের মুখোস উন্মোচিত হবে এবং ওরা জনগণের রোষানল থেকে বাঁচবার জন্য পালাবার চেষ্টা করবে। ওরা যেন কোনোভাবে পালাতে না পারে। ওদের এক শীর্ষ নেতাতো এমনিতেই সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। বাকিরা যেন পালাতে না পারে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ বিদেশি সাহায্যের উপর নির্ভরশীল নয়। বর্তমানে মাত্র ২% অর্থনীতি বিদেশীদের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল। যেখানে আগে ২০-২৫% বিদেশী সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল ছিল। আমাদের নেত্রী বিদেশী বিজ্ঞানী ও অর্থনীতিবিদদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। অতীতেও আমরা স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের পরাজিত করেছি আগামী দিনেও তাদেরকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকেরা, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আজ রাস্তায় নেমেছে। বিক্ষোভ সমাবেশ করছে, তারা রাজপথে গর্জে ওঠেছে। কাদের বিরুদ্ধে? যারা ষড়যন্ত্রকারী, হঠকারী, জনগণের টাকা আত্মসাৎকারী, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, জনগণের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু, রাজনৈতিক অপশক্তি, ২১ আগস্ট ঘাতকদের বিরুদ্ধে। যুবলীগের মুজিব আদর্শের সমাবেশ থেকে বলতে চাই আমরা আর বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে ক্ষান্ত থাকব না, এখন থেকে আগামী দিনে বিএনপি-জামাতকে রাজপথেই কঠোরভাবে প্রতিহত করব।
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। এই ঢাকার যুবলীগ ১/১১ সময় রাজপথে থেকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে মুক্ত করেছিল। এই যুবলীগের নেতা-কর্মীরাই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে, সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। আগামী দিনেও ঢাকার রাজপথে বিএনপি-জামাতকে নামতে দিবে না যুবলীগ। ঢাকার রাজপথ নিয়ন্ত্রণ থাকবে যুবলীগের, সারা দেশের রাজপথ নিয়ন্ত্রণ থাকবে যুবলীগের হাতে।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমানের কুলাঙ্গার সন্তান তারেক রহমান আবারও রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করছে। তাদের সন্ত্রাসীরা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ার দুঃসাহস দেখায়। যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই,আর কোন প্রতিবাদ বিক্ষোভ নয়, যেখানেই বিএনপি-জামাত নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে সেখানেই দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়ে প্রতিহত করবে যুবলীগ।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মো। ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. খালেদ শওকত আলী, শেখ ফজলে ফাহিম, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ হাবিবুর রহমান পবন, মোঃ এনামুল হক খান, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজউদ্দিন আহমেদ, মোঃ জসিম মাতুব্বর, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মুহা: বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মোঃ জহির উদ্দিন খসরু, মোঃ সোহেল পারভেজ, আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল কবির, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ জহুরুল ইসলাম মিল্টন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মীর মোঃ মহি উদ্দিন, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান সম্পাদক শাহীন মালুম, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হারিস মিয়া শেখ সাগর, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক অ্যাড. মোঃ হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আবদুল মুকিত চৌধুরী, ধর্ম সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, মহিলা সম্পাদক অ্যাড. মুক্তা আক্তার, উপ-প্রচার সম্পাদক আদিত্য নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-অর্থ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম দুর্জয়, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোঃ সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-ত্রাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মাহফুজুর রহমান উজ্জ্বল, উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আবদুর রহমান, উপ-পরিবেশ সম্পাদক সামছুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মোঃ ফিরোজ আল-আমিন, উপ-কৃষি ও সমবায় সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।
সারাবাংলা/এসএসএ