দেশে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা নিশ্চিতের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৬ জুন ২০২২ ১৪:০৩
ঢাকা: দেশের মানুষের জন্য আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যত ধরনের সহযোগিতা দরকার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবার জন্য, সবধরনের সহযোগিতা আপনারা আমার কাছ থেকে পাবেন।
সোমবার (৪ জুন) বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস (বিসিপিএস)- এর সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মহাখালী বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জনস প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।
চিকিৎসা সেবায় আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের সবসময় এটাই লক্ষ্য যে আমাদের দেশের মানুষ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন চিকিৎসা পাবে। সেটাই আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং সেটা আমরা করব।
রাজশাহী, সিলেট এবং চট্টগ্রামে আরও তিনটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটা বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আমরা করব, এটাই আমাদের লক্ষ্য।‘ তাছাড়া সরকারি বেসরকারিভাবে মেডিকেল কলেজ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন চিকিৎসা যাতে দেশের মানুষ পায়। আমি জানি আমাদের লোক সংখ্যা অনেক বেশি। চাপ অনেক বেশি। যে কারণে কষ্ট হয়। কিন্তু তারপরও বলব, চিকিৎসা সেবাটা দেখা দরকার।
রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে মানুষকে মুক্ত রাখার লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে সরকার কাজ যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ইদানিং ক্যান্সার, কিডনি রোগের বেশি প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। এ সম্পর্কে মানুষ কিভাব সচেতন থাকতে পারে, সে বিষয়েও মানুষকে জ্ঞান দান দরকার, জানানো দরকার।
চিকিৎসকদের গবেষণায় আরও বেশি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমরা পিছিয়ে থাকব কেন, আমরা পিছিয়ে থাকব না। আমাদের দেশের মানুষের অনেক ভালো মেধা। দেশের চিকিৎসকরা যদি বিদেশে যেয়ে এতো ভালো করতে পারে, তো দেশে করবে না কেন? সেটাই আমার প্রশ্ন?
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ভাষণের কয়েকটি লাইন চিকিৎসকদের উদ্দেশে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বলেছিলেন, ‘আপনাদের সকলের কাছে আমার আবেদন, যদিও সকলের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়। আপনাদের একটু পরিবর্তন হওয়া দরকার। মানবিক পরিবর্তন। মানবতাবোধ আপনাদের মধ্যে জাগ্রত হতে হবে এবং মানুষকে মানুষ হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই আপনারা দেখতে পাবেন যে, আপনাদের দেশের চেহারা অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, এটাই হলো সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি এই মানবতাবোধ দিয়েই এদেশের মানুষকে সেবা করে যাব। সেই সেবাটাই মানুষকে দিয়ে যাচ্ছি। ক্ষমতাটা আমার কাছে একটা সুযোগ, জনগণের সেবা করার। এখানে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ভোগবিলাসে গা ভাসিয়ে দেওয়া নয়। বাংলাদেশের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার এবং তাদের সেবা দেওয়ার একটা সুযোগ হিসাবেই মনে করি।
শিক্ষা-দীক্ষা সবদিক থেকেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সকলে মেধাবী। কাজেই সেটা মাথায় রেখে যত রকমের সুযোগ দরকার, সেটা আমরা সৃষ্টি করে দিতে চাই।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির সময় দেশের বিত্তশালী লোকেরা বিদেশে গিয়ে চিৎকৎসা সেবা নিতে পারেননি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের এখন অনেক বেশি আর্থিক স্বচ্ছলতা হয়ে গেছে। টাকা পয়সা হয়ে গেছে। একটু হাঁচি কাশি দিলেও তারা বিদেশে যায়। একদম উড়ে চলে যায়। একদিকে ভালো তাতে আমাদের এখানে রোগীর চাপটা কম পড়ে।
তিনি বলেন, বিত্তশালী যারা টাকা-পয়সা বানিয়ে বেশ ফুলেফেঁপে উঠেছেন তারা বিদেশে যেতে পারেননি। কারণ তখন তো সব দরজা বন্ধ। তখন বাংলাদেশের হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা নিতে হয়েছে বা ভ্যাকসিন নিতে হয়েছে। তখন অনেকেই এই মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশেও যে এতো সুন্দর হাসপাতাল আছে, এটা তো আমরা কখনো দেখিনি, জানতামও না।
সারাবাংলা/এনআর/এএম