বিজয়ের নিশান উড়ছে ঐ
১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ২৩:০৬
এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : আজ মহান বিজয় দিবস। মুক্তি আনন্দের দিন। মুক্তির ৪৭তম ১৬ ডিসেম্বরে পূর্ব আকাশে যে লাল সূর্য উদিত হবে সে সূর্য বাঙালির পরাধীনতার শৃঙ্খল-ভাঙার প্রতীক। বাঙালি জাতি তার সত্ত্বাকে জানান দিতে, বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াতে, রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী থেকে তার স্বাধীনতার বিজয় নিশান ছিনিয়ে নেয়। বিশ্বের বুকে জন্ম নেয় লাল-সবুজের দেশ বাংলাদেশ।
বিজয় দিবস বাংলাদেশে বিশেষ দিন হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয়। ১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে ১৬ ডিসেম্বরকে বাংলাদেশে জাতীয় দিবস হিসেবে উদ্যাপন এবং সরকারিভাবে এ দিনটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। তবে এ দিনটি গণমানুষের আনন্দের দিন। খুশির দিন। সারাদেশ জুড়ে চলে এর উদ্যাপন। শহরে-নগরে- গ্রামে-গঞ্জে চলে নানা আনন্দ আয়োজন। মেলা বসে, চলে দেশীয় নানা খেলা। গানের-বাজনার আসর বসে। লাল-সবুজের পোশাকেও সাজে বাঙালি।
দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর ৯১ হাজার ৬৩৪ সদস্য বাংলাদেশ ও ভারতের সমন্বয়ে গঠন করা যৌথবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে। পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র জন্ম নেয়।
দিনের প্রথম প্রহরে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় উদ্যাপনের সূচনা ঘটে। জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হয় সম্মিলিত সামরিক কুচকাওয়াজ। এতে অংশ নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সদস্যরা। এ ছাড়াও শিশু-কিশোরদের কুচকাওয়াজ দেখানো হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে ঢাকার অদূরে সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এরপর রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ সম্মান জানান। সবার হাতেই থাকে শ্রদ্ধার ফুল।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বিজয়ের ঘোষণা দেন। এর পরপরই স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে সবকণ্ঠে প্রচার করা হয়—
‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ
খুশির হাওয়া ঐ উড়ছে,
বাংলার ঘরে ঘরে
মুক্তির আলো ঐ ঝরছে।’
সারাবাংলা/জেআইএল/আইজেকে