গণমাধ্যমকর্মী বিল পরীক্ষায় আরও ৬০ দিন পেল সংসদীয় কমিটি
৬ জুন ২০২২ ২০:৪৮
ঢাকা: জাতীয় সংসদে উত্থাপিত ‘গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলী) বিল-২০২২’ পরীক্ষার জন্য আরও ৬০ দিন সময় পেয়েছে সংসদীয় কমিটি।
সোমবার (৬ জুন) তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বিলটি পরীক্ষার জন্য ৬০ দিনের সময় চান। পরে স্পিকার প্রস্তাবটি ভোটে দিলে সংসদ অনুমোদন দেয়।
এর আগে, গত ২৮ মার্চ আলোচিত খসড়া এই আইনটি সংসদে তোলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। পরে বিলটি ৬০ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। তবে বিলটি সংসদে ওঠার পর সংসদীয় কমিটি এ নিয়ে কোনো বৈঠক এখনো করেনি। খসড়া আইনটি সংসদে ওঠার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন এবং মালিকদের সংগঠন এর অনেকগুলো ধারা নিয়ে বিরোধিতা করেছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, কোনো গণমাধ্যমকর্মীর বেতনকাল এক মাসের অধিক হবে না। পরবর্তী মাসের সাত কর্মদিবসের মধ্যে বেতন পরিশোধ করতে হবে।
বিলে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীদের ন্যূনতম ওয়েজ বোর্ড প্রতি পাঁচ বছর পর পর গঠন হবে। ওয়েজ বোর্ড সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, বেসরকারি টেলিভিশন, বেতার ও নিবদ্ধিত অনলাইন মাধ্যমের জন্য প্রয়োজনে পৃথক পৃথক বেতন কাঠামো নির্ধারণ করবে। আগে শুধু সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার জন্য এই ওয়েজ বোর্ড গঠন করা হতো।
প্রস্তাবিত আইনে বলা আছে, গণমাধ্যমে পূর্ণকালীন কর্মরত সাংবাদিক, কর্মচারী এবং নিবন্ধিত সংবাপত্রের মালিকানাধীন ছাপাখানাসহ নিবন্ধিত অনলাইন গণমাধ্যমে বিভিন্ন কর্মে নিয়োজিত কর্মীদের ‘গণমাধ্যমকর্মী’ বলা হবে। গণমাধ্যমকর্মীদের তিনটি বিভাগ করা হয়েছে এই বিলে। সেগুলো হলো- অস্থায়ী বা সাময়িক, শিক্ষানবিশ এবং স্থায়ী।
বিলে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীকে সপ্তাহে অন্যূন্য ৪৮ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। এর বেশি কাজ করাতে চাইলে অধিককাল (ওভার টাইম) ভাতা দিতে হবে।
আগে গণমাধ্যম কর্মীরা চলতেন ‘দ্য নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলী) আইন- ১৯৭৪’র আওতায়। এর সঙ্গে শ্রম আইনের কিছু বিষয় সাংঘর্ষিক হচ্ছিল। পরে সাংবাদিকদেরকে শ্রম আইনের আওতায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাদের শ্রমিক হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এই বিল পাস হলে গণমাধ্যমকর্মীরা আর শ্রমিক থাকবেন না, তাদের গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে অভিহিত করা হবে।
দ্য নিউজ পেপার এমপ্লয়িজ (চাকরির শর্তাবলী) আইনে সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রেস কর্মচারীদের চাকরির শর্ত, আর্থিক বিষয় ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করা ছিল। সরকার ওই আইনকে রহিত করে সব শ্রমিকের জন্য ২০০৬ সালে ‘শ্রম আইন’ প্রণয়ন করে- যাতে সংবাদপত্রের সাংবাদিক, প্রেস শ্রমিক ও প্রেস কর্মচারীদের বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৮ সালে বিলটির নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
পরমাণু শক্তি কমিশন আইন সংশোধনে সংসদে বিল উত্থাপন
পরমাণু শক্তি কমিশনের দুটি পদের নামের পরিবর্তন করে সংসদে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (সংশোধন) বিল-২০২২ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। এদিন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বিলটি উত্থাপনের পর বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।
বিলে বলা হয়েছে, পরমাণু শক্তি কমিশনের কাজে সহায়তার জন্য সরকার একজন সার্বক্ষণিক অর্থ উপদেষ্টা ও একজন সচিব নিয়োগ করবে। এই দুটি পদের নাম পরিবর্তন করার জন্য বিলটি আনা হয়েছে। এ বিষয়ে বিলে বলা হয়েছে, ‘অর্থ উপদেষ্টা’ পদের নাম হবে সার্বক্ষণিক কার্য নির্বাহক (অর্থ) এবং ‘সচিব’ পদের নাম হবে ‘সার্বক্ষণিক কার্য নির্বাহক (প্রশাসন)।
মন্ত্রণালয়/বিভাগের সংযুক্ত দফতর/অধঃস্তন অফিসগুলোর সাংগঠনিক কাঠামোতে সহকারী সচিব, উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদ থাকলেও ওই পদের নাম পরিবর্তন করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর নির্দেশনা দেয়। এ পদনামগুলো সচিবালয়ের বাইরে বিধিবহির্ভূতভাবে ব্যবহার করা হয়। তাই সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, এই পদের নামগুলো পরিবর্তন করার।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম