Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কনটেইনার ডিপোর মালিকের শাস্তি দাবি রুমিন ফারহানার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ জুন ২০২২ ২২:৪৩

ঢাকা: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এ ঘটনার তদন্তসাপেক্ষে কনটেইনার ডিপোর মালিক চট্টগ্রাম দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমানের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার (৬ জুন) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে রুমিন ফারহানা এ দাবি জানান। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বাংলাদেশে দুর্ঘটনারগুলোর একটা বড় উদাহরণ- নিমতলী অগ্নিকাণ্ড। ২০১০ সালে এ অগ্নিকাণ্ডে মারা যান ১২৪ জন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এত মানুষ আগুনে পুড়ে মারা গেলেও সেখানে কোনো মামলা দায়ের হয়নি, হয়েছে একটা জিডি। আবার এই জিডির তদন্ত কাজ এখনো চলমান। এ ঘটনার কোনো শাস্তি বা বিচার হয়নি।
এরপর চুরিহাট্টায় কেমিক্যাল বিস্ফোরণে মারা যায় ৭৭ জন। এ দু’টি ঘটনার জন্য দায়ী কেমিক্যাল। সে সময় সরকার বলেছিল, কেমিক্যাল গুদাম সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে। কিন্তু এখনো তা সরানো হয়নি। সেখানে এখন ১৫ হাজার কেমিক্যাল গুদাম বা বারুদের দোকানের ওপর লাখ লাখ লোক বসবাস করে। সেখানে আবারও যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’

রুমিন বলেন, ‘সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ৪৯ জন মারা গেছে, যার মধ্যে ১২ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০০ জন। সীতাকুন্ডের ঘটনার বিষয়ে একটি কথা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এটি দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। গত রোববার চট্টগ্রামের বিস্ফোরক পরিদর্শক তোফাজ্জেল হোসেন পরিষ্কার করে বলেছেন, এ ডিপোতে যে দাহ্য পদার্থ রাখা হয়েছে তা আমাদের জানানো হয়নি। এ ধরনের পণ্য সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ধরনের অবকাঠামো প্রয়োজন। কিন্তু ডিপোতে সে অবকাঠামো, ব্যবস্থা ছিল না। অনিয়মের কথা স্বীকার করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু এদেশে দায়িত্বে অবহেলার জন্য মন্ত্রীর পদত্যাগের কোনো সংস্কৃতি নেই, তাই আমি নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি না।’

বিজ্ঞাপন

রুমিন আরও বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের একজন পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেজাউল করিম স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাদের কেউ জানায়নি এখানে কেমিক্যাল রাখা রয়েছে। তাহলে অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা হতো একেবারে অন্য পদ্ধতিতে। তাতে বিস্ফোরণের ঘটনা অনেকটা কম হতো। সে ক্ষেত্রে কনটেইনার থেকে নিরাপদ দূরত্ব থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কাজ করতেন এবং এতগুলো মানুষ মারা যেত না। এ মানুষগুলো মারা গেছে একমাত্র ডিপোর মালিকের চরম উদাসীনতায়। এ ডিপোটি ছিল অনুমোদনহীন, এমনকি যখন আগুন লেগেছে তখন মালিকপক্ষ থেকে ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়নি এখানে কেমিক্যাল আছে ‘

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘এ স্পর্ধা তিনি (মালিক) কেন পেয়েছেন? কেননা তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান বলে। এমন একটি পদে থেকে কোনো নিয়মকানুন মানার বিষয় তিনি ভাবতেও পারেননি। ২০১২ সালে তাজরীন ফ্যাশনেও অগ্নিকাণ্ডে মারা যায় ১১২ জন। যার মালিক ও এমডি ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। যাকে বর্তমানে ঢাকা উত্তরের মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়েছে।’

বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘সীতাকুণ্ডের ঘটনার দুদিন পার হলেও সেখানকার মালিকের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ তিনি আইন ভঙ্গ করে ডিপোতে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের মতো দাহ্য পদার্থ রেখেছিলেন। বিশেষ কোনো অবকাঠামো ছাড়াই তিনি এ ধরনের দাহ্য পদার্থ রেখেছিলেন। তা ফায়ার সার্ভিসকেও তিনি জানানোর প্রয়োজনবোধ করেননি। তাহলে এত মানুষ মারা যেত না। আমি এ ডিপোর মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

কনটেইনার ডিপো টপ নিউজ মালিক রুমিন ফারহানা শাস্তি দাবি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

সিনিয়র সাংবাদিক বদিউল আলম আর নেই
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:৩১

সম্পর্কিত খবর