Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ই-বর্জ্য ও মাইক্রোপ্লাস্টিক নিয়ে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৬ জুন ২০২২ ২০:৩০

ঢাকা: ভবিষ্যৎ পরিবেশগত ঝুঁকি বিবেচনায় ই-বর্জ্য ও মাইক্রোপ্লাস্টিক নিয়ে এখন থেকেই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বিজ্ঞান গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আফতাব আলী শেখ।

তিনি বলেন, পরিবেশ সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা না গেলে ভবিষ্যত প্রজন্মের বসবাসের জন্য পৃথিবী ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। যেহেতু একটাই পৃথিবী, তাই একে আমাদের জন্য বসবাসের উপযোগী করতে হবে। ই-বর্জ্য এবং মাইক্রোপ্লাস্টিকের ভবিষ্যৎ ঝুঁকি বিচেনায় নিয়ে এ থেকে পরিত্রাণ পেতে সবাইকে এখন থেকেই সচেষ্ট থাকতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৬ জুন) বিকেলে পরিবেশ অধিদফতরের অডিটরিয়ামে ‘পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরিবেশ অধিদফতর ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) আয়োজনে অনুষ্ঠানের সহআয়োজক ছিল বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রসহ (ক্যাপস) সহ ১৫টি পরিবেশবাদী ও সামাজিক সংগঠন।

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। বাপার যুগ্ন সম্পাদক ও বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সমন্বয়ক মিহির বিশ্বাসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাপা’র সহ-সভাপতি অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার।

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বাংলাদেশের পরিবেশগত নানা সমস্যা কারণ তুলে ধরেন এবং ক্যাপস পরিচালিত কয়েকটি গবেষণার ফলাফল প্রদর্শন করেন। বিশেষ করে তিনি বায়ু, শব্দ, পানি ও দৃষ্টি দূষণ রোধে করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এসব ইস্যুতে সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলোও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদফতরের একার পক্ষে দূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। পরিবেশ অধিদফতরের বাজেট ও লোকবল বাড়ানোর দরকার। অন্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে।

বিজ্ঞাপন

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, পরিবেশ উন্নয়নে অনেক আইন দেশে আছে, কিন্তু যথাযথ প্রয়োগ নেই। এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছাই যথেষ্ট। প্রথমে যে কাজটি হাতে নেওয়া দরকার, তা হলো পলিথিন-প্লাস্টিক দ্রব্য ব্যবহার কঠোরভাবে দমন করা। এতে জনসচেতনতাও জোরদার করা প্রয়োজন। তরুণ সমাজকে পরিবেশ রক্ষার কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাপা’র সহসভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদ বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে। উন্নয়নকে পরিবেশবান্ধব করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে।

স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আলী নকি বলেন, পরিবেশ সচেতনতার শুরু ব্যক্তি পর্যায় থেকে। পরে এটি সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় এবং বিশ্ব জাগতিক আন্দোলনের রূপ নেয়। দৃশ্যমান উন্নয়ন একটি লোভনীয় লক্ষ্য। যেকোনো সরকারই এর দিকে ধাবিত হবে, এটাই স্বাভাবিক। আবার রাজনৈতিক বিরোধী দল বিরোধিতা করবে। এই টানাপোড়েনের মধ্যে একটি বিশ্বাসযোগ্য মধ্যস্ততাকারীর বিশেষ ভূমিকা রাখার এখনই শ্রেষ্ঠ সময়। দূষণ রোধে সচেতনতা বাড়াতে ও পরামর্শ দিতে শিক্ষকদের অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ সোলায়মান হায়দার বলেন, বাংলাদেশে ব্যাপক জনসংখ্যা ও আর্থসামাজিক কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিবেশ ব্যবস্থা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ বিশেষত পানি, বায়ু ও প্রতিবেশের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছাড়া পরিবেশ সংরক্ষণ করা অত্যন্ত কঠিন। সে প্রেক্ষাপটে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ করতে হলে সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে জোরদার কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। প্রাত্যহিক জীবনে আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, শব্দদূষণ ও প্লাস্টিক দূষণ থেকে বিরত থাকার লক্ষ্যে সক্রিয় হতে হবে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. এস এম মনজুরুল হান্নান খান বলেন, পরিবেশের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ জরুরি নয়। আমাদের সুস্থ ও সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতি ও পরিবেশকে রক্ষা করা জরুরি। তাহলেই নিশ্চিত হবে প্রকৃতির ঐক্যতান টেকসই জীবন।

ইকো সোসাইটির প্রধান নির্বাহী এস আরিফ আহমেদ বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আরও বেশি করে সচেতনতা বিষয়ক কার্যক্রম নিতে হবে। দেশব্যাপী স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের মাধ্যমে সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন করে গড়ে তুলতে হবে।

ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধে ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় তরুণ প্রজন্মকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।

সভায় স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ক্যাপসের গবেষণা সহকারীসহ ১৬টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সারাবাংলা/আরএফ/টিআর

ই-বর্জ্য পরিবেশ সুরক্ষা মাইক্রোপ্লাস্টিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর