গৃহায়ন কর্মকর্তার অর্ধকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, দুদকের মামলা
৬ জুন ২০২২ ২৩:৪২
রাজশাহী: জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের রাজশাহী সার্কেলের এক কর্মকর্তার অর্ধকোটিরও বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আয় বহির্ভূত এই সম্পদ অর্জনের কারণে তার বিরুদ্ধে দুদক একটি মামলাও দায়ের করেছে।
এই কর্মকর্তার নাম পরিমল কুমার কুরী (৫৮)। তিনি জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী।
সোমবার (৬ জুন) দুপুরে দুদকের রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি হয়। মামলার বাদী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমীর হোসাইন। তিনি মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পরিমল কুমার কুরীর বাড়ী ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার বেলাট দৌলতপুর গ্রামে। দুদক বলছে, গ্রামে নামে-বেনামে অবৈধ সম্পদ রয়েছে পরিমল কুমার কুরীর। তিনি তার স্ত্রী সোমা সাহার নামেও করেছেন অবৈধ সম্পদ। সোমার বিরুদ্ধেও আলাদা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
দুদক জানিয়েছে, পরিমল কুমার কুরীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি জানতে পেরে দুদক তাকে তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ দেয়। এরপর তিনি সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। এতে তিনি ৩৬ লাখ ১২ হাজার ৬৭৯ টাকার সম্পদের হিসাব দেন। পরে দুদক তার সম্পদের খোঁজে ব্যাপক অনুসন্ধান চালায়। এতে ৫০ লাখ ৪৩ হাজার ৫১৬ টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পাওয়া যায়। এ সম্পদ তিনি গোপন করেন।
দুদক আরও জানায়, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও গোপন করে পরিমল কুমার দুর্নীতি দমন কমিশন ও মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে মামলা করতে দুদক কমিশনে নথিপত্র পাঠানো হয়। সম্প্রতি কমিশন মামলার অনুমোদন দেয়। এরপরই মামলাটি দায়ের করা হলো। মামলা দায়েরের পরই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নথিপত্র মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে দুদক।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের রাজশাহী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পরিমল কুমার কুরী বলেন, ‘আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। স্ত্রীর নামেও অবৈধ সম্পদ নেই। মামলা হয়েছে কি না তাও জানি না।’
পরিমল কুমার কুরী ২০১৮ সালের দিকে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী ছিলেন। সে সময় নগরীর তেরখাদিয়ায় ‘সাইট অ্যান্ড সার্ভিসেস আবাসিক প্লট উন্নয়ন’ প্রকল্পে মাটিভরাট না করলেও ঠিকাদারকে ৫০ লাখ ৪ হাজার ২৯২ টাকা বিল দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে সরকারের কাছে রাখা তাদের জামানত ফেরত চাইলে যাচাইবাছাই করতে গিয়ে বিষয়টি ধরা পড়ে।
তখন গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটিও দেখেছিল যে, ১৮ হাজার ৩৬৪.৩১ ঘনমিটার মাটি ভরাট না করলেও ঠিকাদারকে এর বিল দেওয়া হয়েছে। তবে ওই অভিযোগও মিথ্যা ছিল বলে সোমবার দাবি করেছেন পরিমল কুমার কুরী। তিনি বলেন, ‘শত্রুতা করে ওই অভিযোগ তোলা হয়েছিল। পরে তা সংশোধন করা হয়েছে।’
সারাবাংলা/এমও