পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ‘সুপার গর্জিয়াস’ অনুষ্ঠান বাতিল চান রব
৭ জুন ২০২২ ১৭:৫৮
ঢাকা: নির্মাণকাজ শেষে এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায় বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, আগামী ২৫ জুন সকাল ১০টায় ‘সুপার গর্জিয়াস’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই সেতু উদ্বোধন করা হবে। তবে দক্ষিণবঙ্গের মানুষের জন্য এই ‘স্বপ্নের সেতু’র ‘সুপার গর্জিয়াস’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিলের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
মঙ্গলবার (৭ জুন) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এই দাবি জানান। এসময় তিনি সেতু উদ্বোধনের জমকালো আয়োজনের জন্য বরাদ্দ রাখা টাকা সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের মধ্যে বিতরণের দাবিও জানান।
আ স ম আবদুর রব বলেন, সীতাকুণ্ডের আহাজারিতে যখন সমগ্র জাতি মর্মান্তিক বেদনায় শোকার্ত, তখন অস্বাভাবিক ব্যয়ে নির্মিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের নামে ’জমকালো’ অনুষ্ঠান হবে দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের প্রতি সরকারের চরম নিষ্ঠুরতার বহিঃপ্রকাশ। সরকারকে এই ‘নির্মম পদক্ষেপ’ গ্রহণ থেকে অবশ্যই সরে আসতে হবে।
রাষ্ট্র ‘সুপার গর্জিয়াস’ অনুষ্ঠানের আয়োজন না করে বরং সব অনুষ্ঠান অনাড়ম্বর আয়োজনে সীমিত রাখে উল্লেখ করে রব বলেন, জনগণের সম্পদের অপচয় রোধ করাই সরকারের নৈতিক দায় ও কর্তব্য। ফলে সরকার কোনোভাবেই আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের বাইরে বিলাসবহুল কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে না। মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র ব্যক্তি মালিকানাধীন কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কারও দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়োজন রাষ্ট্রের পড়ে না। অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানেই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মর্যাদা সুরক্ষিত হয়। গর্জিয়াস, আড়ম্বরপূর্ণ, রাজকীয় ইত্যাদি আয়োজন কোনো গণপ্রজাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।
জেএসডি সভাপতি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন— নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণই বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। জাতির আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাহলে ‘সুপার গর্জিয়াস’ অনুষ্ঠান করে আর কী অর্জন করা হবে— প্রশ্ন রাখেন আ স ম রব।
তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সারাবিশ্ব যেখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখতে পাবে, সেখানে জেলায় জেলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের নামে রোড শো, লেজার শো, আতশবাজির মতো অপচয়ের মহোৎসব বাংলাদেশের কয়েক কোটি দারিদ্র্য মানুষের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। জনগণের সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত অপচয় নিশ্চয়ই আত্মতৃপ্তির বিষয় হতে পারে না।
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মন্দায় বাংলাদেশের আমদানি, রফতানি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক বাস্তবতায় যেখানে অপ্রয়োজনীয় ও বিলাসপণ্য আমদানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে, সেখানে উদ্বোধনের নামে ‘সুপার গর্জিয়াস’ ব্যয়বহুল বিলাসী অনুষ্ঠান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়— বলেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর