‘বিশ্বে খাদ্য সংকটের জন্য দায়ী রাশিয়া’
৭ জুন ২০২২ ২৩:৩৭
বিশ্বজুড়ে চলমান খাদ্য সংকটের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে এমন কথা ওঠার পর অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেছেন জাতিসংঘে রাশিয়ার প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া।
চার্লস মিশেল বলেন, মস্কো খাদ্য সরবরাহকে উন্নয়নশীল বিশ্বের বিরুদ্ধে গোপন ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে মানুষকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জবাবে পাল্টা অভিযোগ করে রাশিয়ার দূত নেবেনজিয়া বলেন, মিশেল মিথ্যা ছড়াচ্ছেন।
এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে দেশটির সবগুলো বন্দর দখল নিয়েছে। যে কারণে সমুদ্র পথে ইউক্রেনের রফতানি বাণিজ্য শূন্যে নেমে এসেছে।
বিশ্বের শীর্ষ খাদ্যশস্য রফতানিকারক দেশ ইউক্রেন। বন্দরগুলো অবরুদ্ধ থাকায় প্রচুর খাদ্যশস্য গুদামে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। সেগুলো রফতানি করা যাচ্ছে না। ফলাফলে, বিশ্ববাজারে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট। বিশ্বজুড়েই মূল্যস্ফীতি আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
অন্যদিকে, রাশিয়াও শীর্ষ খাদ্যশস্য এবং সার রফতানিকারক দেশ। ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নানান নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া থেকেও আগের মতো খাদ্যপণ্য বিশ্ববাজারে আসতে পারছে না। এটিও খাদ্যসংকট দেখা দেওয়ার মূল কারণগুলোর একটি। আর সারের অভাবে বিভিন্ন দেশের নিজস্ব ফসল উৎপাদন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। সব মিলিয়ে বিশ্বের সামনে খাদ্য সংকটের ভয়াবহ এক ভবিষ্যত অপেক্ষা করছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনে পড়ে থাকা শস্য বের করতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। জবাবে রাশিয়া বলেছে, যদি তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় তবেই তারা ইউক্রেনের শস্য বের করতে দেবে। এ নিয়ে এক ধরনের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
মিশেল বলেন, রাশিয়ার যুদ্ধের নাটকীয় পরিণতি পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। খাবারের দাম বাড়ছে। মানুষকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যা পুরো অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা ছড়াচ্ছে। বিশ্বজুড়ে যে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে সে জন্য একমাত্র রাশিয়া দায়ী।
তিনি আরও বলেন, নিজের চোখে ইউক্রেইনের ওদেসা বন্দরে রুশ অবরোধের কারণে লাখ লাখ টন শস্য আটকা পড়ে থাকতে দেখেছেন। এজ পর্যায়ে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে শস্য চুরি এবং ইউক্রেনে ফসল চাষ ও তোলার কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেন।
একের পর এক এমন সব অভিযোগে ক্ষুব্ধ হয়ে নেবেনজিয়া ওয়াকআউট করেন। বিবিসি জানায়, নেবেনজিয়া চলে যাওয়ার সময় মিশেল সরাসরি তাকে লক্ষ্য করে বলেন, আপনি বেরিয়া যেতেই পারেন। সত্য কথা না শোনাই বেশি সহজ।
তবে, নেবেনজিয়া বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, চার্লস মিশেল এখানে যে মিথ্যা ছড়াতে এসেছেন, সে কারণেই বৈঠক থেকে তিনি ওয়াকআউট করেছেন।
সারাবাংলা/একেএম