ক্যানসারের যুগান্তকারী ওষুধে ১৮ জনের সবাই সুস্থ
৮ জুন ২০২২ ০৯:১৭
বিশ্বব্যাপী যেসব রোগে মানুষের মৃত্যু হয় ক্যানসার তার মধ্যে অন্যতম। ক্যানসার আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ফিরে এলেও ধরে নেওয়া হয় মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা। বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের যুগেও এই রোগের ওষুধ উদ্ভাবনে আবিষ্কারে ব্যর্থ ছিলেন গবেষকরা। কাটাছেঁড়া করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীকে সুস্থ করতে সক্ষম হলেও ছিল না কোনো ওষুধ। এবার প্রাণঘাতি এই রোগের ওষুধ আবিষ্কার করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক।
গবেষণায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানিরা। ক্যানসারে আক্রান্ত কয়েকজন রোগীকে প্রায় ছয় মাস ধরে ডোসটারলিমাব নামের একটি ওষুধ পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হয়। এই ওষুধের প্রভাবে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রত্যেক রোগীই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এরমধ্য দিয়ে বিশ্বে এবারই প্রথম কোনো ওষুধে ক্যানসারের রোগীদের পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার খবর পাওয়া গেল।
গবেষকেরা মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসকে জানান, পরীক্ষামূলকভাবে ১৮ জন ক্যানসার রোগীর ওপর ডোসটারলিমাব ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছিল। গবেষণায় অংশ নেওয়া রোগীরা কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। ছয় মাস ধরে প্রতি তিন সপ্তাহ পরপর ওষুধটি প্রয়োগের পর তাঁদের শারীরিক পরীক্ষায় দেখা যায়, সবাই ক্যানসারমুক্ত হয়েছেন। কারও শরীরে টিউমারের অস্তিত্ব ছিল না ওষুধটি প্রয়োগের পর।
নিউইয়র্ক মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারের চিকিৎসক লুইস এ ডিয়াজ জে বলেন, ক্যানসারের চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণায় এর আগে এমন অর্জন আর দেখা যায়নি। পরীক্ষামূলকভাবে ওষুধ প্রয়োগের ট্রায়ালে অংশ নেওয়া সব রোগীর ক্যানসার মুক্তির ঘটনা ইতিহাসে এটাই প্রথম।
গবেষকেরা বলছেন, শতভাগ সাফল্য পাওয়া গেলেও এই পরীক্ষা খুবই অল্পসংখ্যক মানুষের ওপর চালানো হয়েছে। তাই আরও বড় পরিসরে ওষুধটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাতে হবে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার কোলন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অ্যালান পি ভেনোক বলেন, ওষুধ প্রয়োগের পর প্রত্যেক রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনা অভাবনীয়। এমনকি ট্রায়ালে অংশ নেওয়া রোগীরা উল্লেখযোগ্য কোনো শারীরিক জটিলতার শিকার হননি। এটা অবশ্যই বিশাল অর্জন।
স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ও গবেষণাপত্রটির সহলেখক চিকিৎসক আন্দ্রেয়া সেরেক বলেন, গবেষণায় অংশ নেওয়া রোগীরা যখন জানতে পারলেন তারা ক্যানসার মুক্ত, তখন অনেকেই খুশিতে কেঁদে ফেলেছেন। এর চেয়ে আনন্দের মুহূর্ত আর হতে পারে না।
সারাবাংলা/এএম