রাজপথে শক্তির মহড়া আওয়ামী লীগের, অব্যাহত থাকবে নির্বাচন পর্যন্ত
৮ জুন ২০২২ ২০:১২
ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের অব্যাহত ষড়যন্ত্র-চক্রান্তকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিহত করার বার্তা দিয়ে রাজপথে শক্তির মহড়া অব্যাহত রাখবে টানা মেয়াদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আগামী ২৫ জুন পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন উৎসবের বার্তায় উজ্জীবিত হয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত রাজপথে শক্তির মহড়ার দেওয়ার কৌশলে হাঁটবে দলটি।
বুধবার (৮ জুন) দুপুরে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ‘বিএনপি-জামায়াতের পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি ঘটনোর ঔদ্ধত্যপূর্ণ স্লোগান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি’র প্রতিবাদের বিক্ষোভ সমাবেশে এমন কঠোর বার্তাই দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। জানা গেছে, ঢাকা উত্তরের এই বিক্ষোভ সমাবেশের ধারাবাহিকতায় আগামী ১০ জুন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগও এক বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।
আরও পড়ুন- আঘাত করলে পাল্টা আঘাতের জন্য আওয়ামী লীগ প্রস্তুত: নানক
বুধবার দুপুর দেড়টার পর থেকে মহানগরের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় হয়ে হোটেল সোনারগাঁওয়ের সামনে জমায়েত হতে শুরু করে। সোনারগাঁও হোটেল সংলগ্ন প্রান্তে ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতাসহ মহানগর নেতারা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সমাবেশ পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।
বিক্ষোভ সমাবেশে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন ইউনিটের খণ্ড খণ্ড মিছিলের সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। এসব খণ্ড খণ্ড মিছিল থেকে থেকে ‘একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘জয় বাংলার হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা হুঁশিয়ার সাবধান’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে নেতাকর্মীদের।
সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হুমকি দিলে, শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিলে কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। মির্জা ফখরুল সাহেব, মনে রাখতে হবে— ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হবে। এটি কেউ যদি আঘাত করে, তাহলে পাল্টা আঘাতের জন্য আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রস্তুত রয়েছি।
তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড় হয়ে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে থেকে পান্থপথ হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ হয়। এদিকে, কর্মদিবসে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে রাজধানীতে যানজটের কারণে ব্যাপক ভোগান্তি দেখা দেয়। বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কারণে কিছু কিছু এলাকায় গাড়ি চলাচল থমকে যায়।
সমাপনী বক্তব্যে সমাবেশ সফল করার জন্য নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি যানজটে ভোগান্তির কারণে ঢাকাবাসীর কাছে দুঃখপ্রকাশ ও ক্ষমাপ্রার্থনাও করেন ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। বলেন, রাজপথে জবাব দেওয়ার জন্য একটু নেমেছি। আপনাদের একটু সময় নষ্ট হয়েছে। যানজটে কষ্ট হয়েছে। এজন্য আমরা করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
এর আগে বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে বজলুর রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াত আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়। তাই তাদের যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানেই উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।
কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরাজি, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ মহানগরের নেতারা।
বিক্ষোভ সমাবেশের আগে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মাণে লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আমরা সহনশীলতার রাজনীতি করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভাবার কোনো কারণ নেই। আজকের সমাবেশ এটাই প্রমাণ করে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, আজকের এই বিক্ষোভ সমাবেশে লাখ লাখ লোকের উপস্থিতি প্রমাণ করে— আওয়ামী লীগ সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এটাই আজকের দিনে আমাদের প্রত্যয়।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর ভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশের সমাপনী ঘোষণা করেন ঢাকা ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর