একনজরে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট
৯ জুন ২০২২ ১৫:৫৩
ঢাকা: জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট। ইতিহাসের বৃহত্তম এই বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামের এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস অভিঘাত থেকে মুক্ত হয়ে উন্নয়নের ধারায় ফিরে আনার জন্য কৃষি, খাদ্য, নতুন কর্মসংস্থান সৃজন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনা, রাশিয়া ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলা করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং ভর্তুকির চাপ সামাল দেওয়াসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাজেটের আয়–ব্যয়
প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের চূড়ান্ত আকার (ব্যয়) ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। বাজেটে মোট জিডিপি‘র (মোট দেশজ উৎপাদন) আকার ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। এতে বাজেটে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির সাড়ে ৫ শতাংশ।
বাজেটের আয় যেভাবে আসবে
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মোট আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে যা ছিল তিন লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে আদায় করা হবে তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর-বহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আদায় করা হবে ১৮ হাজার কোটি টাকা।
এছাড়াও আগামী বাজেটে কর ব্যতীত প্রাপ্তি থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এনবিআর খাতে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্য নির্ধারিত রয়েছে তিন লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও আগামী অর্থবছরে বাজেটে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা বিদেশি অনুদান পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ থাকছে।
বাজেটে যেভাবে ঘাটতি পূরণ করা হবে
আগামী অর্থবছরের বাজেটে মোট ঘাটতি থাকছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এই ঘাটতি মোট বাজেটের ৩৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। এই বিশাল ঘাটতি বাজেট পূরণের সরকার অভ্যন্তরীণ ঋৎস ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। বিদেশ থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে ঋণ নেওয়া হবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ঋণ নেওয়া হবে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৫ হাজার কোটি টাকা অনান্য খাত থেকে নেওয়া হবে।
ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের মধ্যে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৬৮ হাজার ১৯২ কোটি টাকা এবং স্বল্প মেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৩৮ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। পরবর্তী সময়ে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৮৭ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়।
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)
আগামী অর্থবছরের জন্য এডিপি’র আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৪৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল দুই লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে দুই লাখ ৯ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
বাজেটে জিডিপি আকার ও মূল্যস্ফীতি
আগামী অর্থবছরে জন্য জিডিপি’র আকার প্রাক্কলন করা হয়েছে ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ৫২তম বাজেট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট বাজেট ২০২২-২৩