ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্তমান সরকারের চতুর্থ বাজেট সংক্ষিপ্ত সময়ে সংসদে পেশ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে অধিবেশন পরিচালনা করা হয়েছে। এ কারণে করোনা পূর্ববর্তী সময়ের মতো বাজেট পেশকালে অধিবেশনে উৎসবের আমেজ দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। এই বৈঠক মাত্র সোয়া এক ঘণ্টায় শেষ হয়। বৈঠকে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অধিকাংশ সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বাজেট পেশের পর অর্থবিল-২০২২ পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আগামী ২৯ জুন এই বিল পাস হবে। আর বাজেট পাস হবে ৩০ জুন। এর আগে, আগামী রোববার (১২ জুন) থেকে বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনা শুরু হবে। সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা এই আলোচনায় অংশ নেবেন।
সংসদে সংক্ষিপ্ত পরিসরে উত্থাপিত লিখিত বাজেট বক্তৃতা ছিল ২০৮ পৃষ্ঠার। গত কয়েক অর্থবছরে বাজেট পেশের পাশাপাশি তার চুম্বক অংশ পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনায় দেখানো হলেও গত বছর অর্থমন্ত্রী পাঠ না করে প্রায় পুরো অংশই ডিজিটাল পদ্ধতিতে উপস্থাপন করেন। এবারও অর্থমন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার পর ডিজিটাল উপস্থাপনা শুরু হয়। শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতার মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপনা শেষ করেন মন্ত্রী।
প্রতিবছর বাজেট পেশের দিনটিতে সংসদ ভবন জুড়ে থাকে উৎসবের আমেজ। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। এবারও সংসদ ভবন এলাকায় প্রবেশে ছিল কড়াকড়ি। সবাইকে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হয়েছে। আর মূল ভবনে স্বল্প সংখ্য কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করেছেন। এমপিসহ সংশ্লিষ্টদের তাপমাত্রা মাপা হয়। সংসদ পরিচালনায় দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও একই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
প্রতিবছরই বাজেট উপস্থাপনের দিন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকগণ, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকলেও এবার কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আগেই সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার স্থগিত করা হয়। তবে বরাবরের মতো রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সংসদে উপস্থিত থেকে বাজেট পেশ প্রত্যক্ষ করেন। অধিবেশন শুরুর আগে প্রস্তাবিত বাজেটে সই করেন তিনি। দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে ওই বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, একই সতর্কতা মেনে আগামী রোববার থেকে বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনা শুরু হবে। প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে আলোচনা চলবে। সংসদ সদস্যরা কে, কবে অংশ নেবেন তা ইতোমধ্যে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সম্পুরক বাজেট পাস হবে। এর পর আগামী অর্থবছরের বাজেটের উপর আলোচনা শুরু হবে।